বাংলাদেশের শহুরে নিম্নবিত্তের আয়ের প্রায় শতভাগই খাদ্যসংক্রান্ত খাতে ব্যয় হয়ে যায়। মধ্যবিত্তের সিংহভাগ উপার্জনও বাসা ভাড়া ও খাদ্যপণ্য ক্রয়ে ব্যয় হয়। জলাশয়ের পানির স্বল্পতা, ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের উচ্চ খরচ কিংবা দুষ্প্রাপ্যতা, ঋতু পরিবর্তন, খরা, রাসায়নিক ব্যবস্থাপনার জঞ্জাল, উচ্চ সুদের কৃষিঋণ এবং কৃষি উপকরণের কোম্পানি নির্ভরতার প্রত্যক্ষ কারণে দিন দিন বাড়ছে কৃষি উৎপাদন ব্যয়। মূল্যবৃদ্ধির কিছু পরোক্ষ কারণও রয়েছে।

চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন বাম্পার ফলন

বাংলাদেশে বিশেষ এলাকায় বিশেষ ফলন বেশি হয়। সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় বাম্পার ফলন হলেই দাম পড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষক। উৎপাদন মূল্যের বিপরীতে বাজারমূল্য কম হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি স্বাধীনতার ৫০ বছরেও চালু করতে পারেনি বাংলাদেশ। সারে সরকারের দেওয়া ভর্তুকিতেও পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে। জমির পরিমাণ ও ফসলের চাহিদামাফিক সারের ডিজিটাল সরবরাহব্যবস্থা নেই, ফলে নিবন্ধনের বিপরীতে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভর্তুকি দেওয়া যায় না। শেষ পর্যন্ত লাভবান হয় দলীয় ডিলার। সরকার–নির্ধারিত মূল্যে কখনোই সার বিক্রি করে না ডিলার, কৃষকের কাছ থেকে আদায় করে ঘুষ ও অতিরিক্ত মূল্য। কৃষিভর্তুকির আমূল ডিজিটাল সংস্কার জরুরি। জাতীয় পরিচয়পত্র, চাষাবাদের জমি ও পেশাভিত্তিক ফলন নিবন্ধন, সার সরবরাহ, ঋণ-প্রণোদনা-ভর্তুকি প্রদানের ডিজিটাল ব্যবস্থায় যেতে হবে। দালালদের পাশ কাটিয়ে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় সরাসরি কৃষক থেকে ধান কেনার মডেলে যেতে হবে।

বৈচিত্র্যহীন চাষের একচেটিয়া মডেলে একটি এলাকায় সবাই ধান করলে চাইলেও অন্য ফলন করা যায় না। ফলন বৈচিত্র্য ও বাজার চাহিদামাফিক নিবন্ধন কৃষি প্রশাসনের কাজ। দেশীয় জাতের ফলন থেকে চাষি একবার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়া বিশেষ জাত দু-তিন বছরে নাই হয়ে যায়। কৃষক জিএমও বীজ ও চারা নির্ভর হয়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রেই এরা রোগবালাই এবং পতঙ্গ–প্রতিরোধী নয় বলে অতিরিক্ত সার, কীট-ছত্রাক ব্যবহার করতে হয়। এগুলোর ব্যবহারে উপকারী পোকার প্রজাতি নষ্ট হচ্ছে, শক্তিশালী হয়ে উঠছে ক্ষতিকারক পোকামাকড়-ছত্রাক। ক্রমবর্ধমান রাসায়নিক নির্ভরতার বিপরীতে জৈব-রাসায়নিক সমন্বিত চাষাবাদের দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প বানানো দরকার।

এক দিকে মুলা, ফুলকপির অতিরিক্ত ফলন হচ্ছে অথচ অন্য ফসলের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদনই হচ্ছে না। প্রতিবছর আদা, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।নিরানন্দ কৃষিশ্রম উপজেলা কিংবা ইউনিয়ন কৃষি অফিসগুলোকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা গেলে কৃষক সস্তায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ভাড়া নিতে পারতেন। কায়িক শ্রম, উচ্চ মূল্য থেকে মুক্তি পেলে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে উৎসাহিত হবেন। কৃষি সরঞ্জাম ক্রয়ে সরকার ভর্তুকি দেয়, কিন্তু নষ্ট যন্ত্র মেরামত ও সংরক্ষণের কারিগরি সেবা নেই বলে এই ভর্তুকি কাজে আসে না।

পাইকারি বাজারে কৃষকের অধিকার

কারওয়ান বাজারসহ কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক বাজারগুলো পাইকারদের দখলে থাকে, দালালদের মাধ্যমে প্রভাবশালীরা বাজারসংলগ্ন রাস্তা পর্যন্ত ভাড়া দেয়। ব্যক্তি কৃষকের এখানে ফসল নিয়ে আসার সুযোগ নেই। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদনের পেছনে যে মান, পরিশ্রম, পরিবেশ ও বৈচিত্র্যগত বহু গল্প থাকে, ক্রেতার তা অজানাই থাকে। নেই মূল কৃষক ও দালালদের মধ্যে মূল্য প্রতিযোগিতাও।

মানহীন কৃষিপণ্য পরিবহন শাকসবজি, ফল, খাদ্যশস্য, মাছ প্রায় সবই খোলা ট্রাকে, বাসের ছাদে কিংবা বাক্সে অত্যন্ত গরমের মধ্যে, অত্যধিক বাতাসে, রোদে পরিবহন করা হয়। শ্রেণীকৃত, হিমায়িত, তাপানুকূল ‘ফুডগ্রেড’ পরিবহন ব্যবস্থা নেই। মহাসড়কের পাশে, ফেরিঘাটে, যানজটে মাইলের পর মাইল দাঁড়িয়ে থাকে কৃষি পণ্যবাহী ট্রাক। এতে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়, জ্বালানি খরচ বাড়ে, পণ্য নষ্ট হয়, দামও বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ১৫ শতাংশ পণ্য শুধু পরিবহনে নষ্ট হয়।

দাম বাড়াচ্ছে চাঁদাবাজি রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মহাস্থান হাট থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রামে আসতেই সব ধরনের সবজির দর বেড়ে যাচ্ছে ১০ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত। পথে পথে চাঁদাবাজি। পণ্যবাহী ১০ টনের একটি ট্রাককে চাঁদা দিতে হয় প্রায় সাড়ে ২২ হাজার টাকা। হাইওয়ে পুলিশের পণ্য পরিবহনে সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, অথচ তারাই বেশি চাঁদাবাজি করে। যেখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীই চাঁদাবাজি করে, সেখানে কৃষিপণ্যের দাম কীভাবে কমবে! এর সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয় সমিতির চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, পাইকারি বাজারের স্থান ও দালালের খরচ। দালালেরা স্থানীয় বাজারে সিন্ডিকেট নির্ধারিত পাইকারি মূল্যে পণ্য বিক্রিতে কৃষককে বাধ্য করে। কৃষিপণ্যের জন্য বিশেষ সুবিধার সড়ক পরিবহনের চিন্তা সরকারের নেই। দেশের সবজি ও কৃষি উৎপাদনের আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোকে বিভাগীয় শহরের সঙ্গে ট্রেন সংযুক্ত করার কাজ এখনো বাকি। বগুড়া-সিরাজগঞ্জের মতো দরকারি কৃষি রেল রুট কিংবা কৃষিপণ্য পরিবহনবান্ধব বিশেষ রেল কোচ এখনো চালু করা যায়নি। কৃষি হাবগুলো থেকে মহানগরে পণ্য পরিবহনের জন্য শ্রেণীকৃত তাপানুকূল, হিমায়িত ট্রেন কোচ বা বিশেষ সড়ক পরিবহনের ব্যবস্থা থাকলে বহুস্তরের চাঁদাবাজির লাগাম টানা যেত। তরমুজের দাম বাড়ার পর জেলা প্রশাসনকে কম দামে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ ধরনের লোকদেখানো সস্তা কাজ না করে পুলিশের উচিত বহুস্তরের চাঁদাবাজি থামানো। বাজারব্যবস্থায় অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে দালাল ও পাইকার গোষ্ঠী সাময়িকভাবে ক্রয় বন্ধ করে পচনশীল কৃষিপণ্যের সমূহ ক্ষতি করতে সক্ষম।

চাই টেকসই স্টোরেজ অবকাঠামো

ঋণের কারণে ফসল সংরক্ষণ করতে পারেন না কৃষক, উৎপাদনের অব্যবহিত পরেই বিক্রি করে ঋণের কিস্তি কিংবা দেনা শোধ করতে হয়। তার উপর উচ্চ আর্দ্রতার এবং উচ্চ তাপমাত্রায় পচনশীল সবজিজাতীয় কৃষিপণ্য সংরক্ষণের কোনো উপায়ই দেশে নেই, নেই অঞ্চল ও পণ্যভিত্তিক অবকাঠামো। ভিন্ন ভিন্ন ফসলের চাহিদা মোতাবেক আমাদের কোল্ডস্টোরেজ শ্রেণীকৃত নয়, দেখা যায় পুরোটাই আলুর উপযোগী নয়! ফলে কৃষকেরা অ্যান্টি ক্লোরিনেটেড ওয়াটার, কার্বাইড কিংবা ফরমালিন ব্যবহার করছেন! উৎপাদিত পচনশীল শাকসবজি, ফল-ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থা না–থাকায় মৌসুমের বাইরে ফলনের কোনো বাজার নেই। এতে কৃষক বেশি উৎপাদিত পণ্য মৌসুমেই কম দামে বাজারে ছাড়তে বাধ্য হন। ভিন্ন ভিন্ন জাতের আম পাড়ার মধ্যে ফারাক তিন-চার সপ্তাহ, লিচুর মাত্র দুই সপ্তাহ, কাঁঠালের তিন-চার সপ্তাহ, সবজি ও ফুলের ক্ষেত্রেও দু-তিন সপ্তাহ। সংরক্ষণব্যবস্থা না থাকায় এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই কৃষককে বাজারজাত করতে হয়। তাই সমন্বিত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার অভাবে বাড়তি পচনশীল পণ্য পানির দরে বিক্রি হয়। অথচ মৌসুমের পরেই কিন্তু বাজারে এগুলোর ভালো দাম থাকে। এতে বিষ মিশিয়ে সংরক্ষণের প্রবণতা বাড়ে। উপরন্তু বাংলাদেশের কৃষিপণ্য বিক্রির বড় কোন আন্তর্জাতিক বাজারও তৈরি হয়নি। এর প্রধান কারণ হতে পারে, মানসম্পন্ন বিপণন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, ফুডগ্রেড সংরক্ষণ, মানসম্পন্ন প্যাকেজিং এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহব্যবস্থায় সংযুক্ত হওয়ার বিপণন ব্যর্থতা।

স্বাধীনতার পাঁচ দশকে বাংলাদেশের যত অর্জন, তার মধ্যে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম কৃষি উৎপাদনকারী দেশ। এই অর্জনকে নিবন্ধন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের অবকাঠামোগত উৎকর্ষে সঞ্চারিত করে প্রকৃত কৃষকদের ধনী করা গেলে সেটাই হবে টেকসই উন্নয়ন।

৯৭২ বার পঠিত

শেয়ার করুন

Picture of ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ, ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম (মনোহরগঞ্জ) উপজেলার খিলা ইউনিয়নের বান্দুয়াইন গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক। তিনি ১৯৯৭ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৯৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ অধ্যয়ন করেন। ২০০৫ থেকে অদ্যাবধি টেলি যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার সল্যুশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডস-এ কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে তিনি এলকাটেল লুসেন্ট বাংলাদেশ, টেলিকম মালয়েশিয়া বাংলাদেশ একটেল (বর্তমান রবি), এমটিএন কমিউনিকেশনস নাইজেরিয়া, এরিকসন নাইজেরিয়া, এরিকসন ঘানা, এরিকসন দক্ষিণ কোরিয়া, এরিকসন নেদারল্যান্ডস এ কাজ করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। জনাব ফয়েজ তৈয়্যব একজন ‘টেকসই উন্নয়ন ও অবকাঠামো’ বিষয়ক প্রবন্ধকার। টেকসই উন্নয়নের নিরিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের কাঠামোগত সংস্কার, সুশাসন, প্রতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং প্রযুক্তির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় জ্ঞানের সমন্বয় ঘটিয়ে বাংলাদেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধানের পর্যালোচনা করে থাকেন। তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। তাই এসকল বিষয়ে তাঁর নিজস্ব মুক্ত চিন্তা স্বাধীন ভাবে প্রকাশের প্রয়াস করেন। তাঁর লিখায় যা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পায়ঃ সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্ট এর নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটি, অর্থনীতি শিক্ষা স্বাস্থ্য ও কৃষি ইত্যাদি খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারিগরি প্রস্তুতি, ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিক ম্যানেজমেন্টের কারিগরি দিক এবং অটোমেশন। সামাজিক সংযোগের দিক থেকে উনি একজন টেকসই উন্নয়ন কর্মী, ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। গ্রীণপিস নেদারল্যান্ডস এর সদস্য। দৈনিক বণিকবার্তা, দৈনিক শেয়ারবিজ ও দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনের উপ সম্পাদকীয় কলাম লেখক।
Picture of ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ, ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম (মনোহরগঞ্জ) উপজেলার খিলা ইউনিয়নের বান্দুয়াইন গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক। তিনি ১৯৯৭ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৯৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ অধ্যয়ন করেন। ২০০৫ থেকে অদ্যাবধি টেলি যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার সল্যুশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডস-এ কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে তিনি এলকাটেল লুসেন্ট বাংলাদেশ, টেলিকম মালয়েশিয়া বাংলাদেশ একটেল (বর্তমান রবি), এমটিএন কমিউনিকেশনস নাইজেরিয়া, এরিকসন নাইজেরিয়া, এরিকসন ঘানা, এরিকসন দক্ষিণ কোরিয়া, এরিকসন নেদারল্যান্ডস এ কাজ করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। জনাব ফয়েজ তৈয়্যব একজন ‘টেকসই উন্নয়ন ও অবকাঠামো’ বিষয়ক প্রবন্ধকার। টেকসই উন্নয়নের নিরিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের কাঠামোগত সংস্কার, সুশাসন, প্রতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং প্রযুক্তির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় জ্ঞানের সমন্বয় ঘটিয়ে বাংলাদেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধানের পর্যালোচনা করে থাকেন। তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। তাই এসকল বিষয়ে তাঁর নিজস্ব মুক্ত চিন্তা স্বাধীন ভাবে প্রকাশের প্রয়াস করেন। তাঁর লিখায় যা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পায়ঃ সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্ট এর নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটি, অর্থনীতি শিক্ষা স্বাস্থ্য ও কৃষি ইত্যাদি খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারিগরি প্রস্তুতি, ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিক ম্যানেজমেন্টের কারিগরি দিক এবং অটোমেশন। সামাজিক সংযোগের দিক থেকে উনি একজন টেকসই উন্নয়ন কর্মী, ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। গ্রীণপিস নেদারল্যান্ডস এর সদস্য। দৈনিক বণিকবার্তা, দৈনিক শেয়ারবিজ ও দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনের উপ সম্পাদকীয় কলাম লেখক।

মতামত প্রকাশ করুন

Scroll to Top