জীবন-জীবিকা একসঙ্গে বাঁচাতে পারলেই বাঁচবে দেশ

যদি অর্থনীতি একটি প্রান্তিক মন্দায় পড়ে, তাহলে সারা বছরে তার পক্ষে গড়ে সোয়া ৫ শতাংশ উচ্চ ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয় । ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি হিসাবেই ৬৬ দিন লকডাউন ছিল । কার্যত প্রায় সবকিছুই ছিল বন্ধ । অর্থবছরের প্রথম মাসটি ছাড়া বাকি ১১ মাসে আমদানি, রপ্তানি, অভ্যন্তরীণ ভোগ ও বিনিয়োগ-সবকিছুই যেখানে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিতে পড়েছে, সেখানে শুধু প্রবাসী আয়ের উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে ভর করে ৫ শতাংশের ওপর উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে, বিশ্বব্যাংক সেই প্রশ্নই তুলেছে । প্রবৃদ্ধি গাণিতিক বিষয়, গোঁজামিল এখানে চলে না ।

বাংলাদেশে এমনিতেই ভোগের ওপর ভিত্তি করে উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, বিশ্বে যা ব্যতিক্রম । বার্ষিক জাতীয় প্রবৃদ্ধির সঙ্গে যদি আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধির মিল না থাকে, তাহলে প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় । কারণ, সরকারি ভোগ বা খরচ বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি বেশি দেখানোর সুযোগ থাকে । বাজেট প্রাক্কলনে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরিচালনা খরচ বাড়িয়ে বাংলাদেশ ঠিক তা-ই করে আসছে গত এক দশক । চলমান এক অর্থবছরেই সরকার পরিচালনা খরচ ১৯ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে ।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি ভোগ ও বিনিয়োগের গড় প্রবৃদ্ধি যেখানে মাত্র ২ শতাংশ, সেখানে পরিসংখ্যান ব্যুরো ভোগ ও বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ । করোনার আগেই বাংলাদেশে আমদানি, রপ্তানি, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং বেশ কিছু ব্যক্তি খাতের ভোগে সংকোচনের সুস্পষ্ট আভাস ছিল ।

বিগত বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে বার্ষিক বাজেট গড়ে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা করে বাড়ছে, কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের হার কমতে কমতে ৮০ শতাংশের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে । করোনার প্রভাবে ৬ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন কমেছে ১১ শতাংশ । চলতি অর্থবছরের বাজেট নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজস্ব বাজেটে সুদ খাতে যেখানে ১৮ শতাংশ অর্থ ব্যয় করার কথা, সেখানে ৬ মাসেই সুদ খাতে ব্যয় ২৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে । সামগ্রিক বাজেট বাস্তবায়ন পরিস্থিতিতে অবনতি দৃশ্যমান । রাজস্ব খাতে বাজেটে যে বরাদ্দ ছিল, তার ৩০ শতাংশ খরচ হয়েছে ।

কিছু কিছু খাতে গড় ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম খরচ হলেও সুদ খাতে ব্যয় হয়েছে সর্বোচ্চ । করোনার কারণে স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব লাভ করার কথা । বাস্তবে এ খাতে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের বিপরীতে অর্থবছরের প্রথমার্ধে ব্যয় হয়েছে ৫ শতাংশ । বাজেট বাস্তবায়নের হার কম হলেও অস্বাভাবিক সঞ্চয়পত্র ঋণ (রাজস্ব আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ) ও বৈদেশিক ঋণের কারণে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে সুদ খাতের ব্যয় । এতে প্রায় পৌনে এক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির চাপ আছে । প্রভাবশালী মহলকে যেহেতু উপযুক্ত কর প্রক্রিয়ায় আনা যাচ্ছে না, তাই আদতে এই চাপ গিয়ে পড়ছে নিয়মিত কর ও মূসক প্রদানকারী ব্যবসায়ীদের ওপর, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কর্মসংস্থানের বিকাশ ।

বাংলাদেশের প্রবাসী আয় বেড়েছে সত্য । তবে ১৫ বা ১৬ শতাংশ প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি কখনোই -১৬ দশমিক ৮ শতাংশ রপ্তানি হ্রাস, -১২ শতাংশ আমদানি হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য সার্বিক ভোগ হ্রাস, অব্যাহত বিনিয়োগ মন্দা কাটিয়ে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম নয় । বিশ্বব্যাংকের প্রবৃদ্ধি (২ দশমিক ৪ শতাংশ) হিসাবের সঙ্গে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (৩ শতাংশ) পার্থক্য থাকাটা লজ্জার বিষয় । অন্যদিকে ,পরিসংখান ব্যুরো অর্থবছরের মহামারিতে আক্রান্ত শেষ তিনটি মাস হিসেবে বিবেচনায় এনে প্রবৃদ্ধির তথ্য হালনাগাদ করছে না ।

সানেম, সিপিডি, উন্নয়ন অন্বেষণ, পিআরআই, বিআইডিএসসহ বাংলাদেশের সব সরকারি-বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বলছে, করোনার কারণে কমবেশি দেড় কোটি মানুষ নতুন করে বেকার হয়েছে । সানেমের হিসেবে দারিদ্র্যের হার ৪২ শতাংশ । খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় কমানো, সঞ্চয় ভেঙে চলার মতো পদক্ষেপের পরও প্রায় ৬০ শতাংশ পরিবার দেনার মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম । এশিয়া ফাউন্ডেশন বলেছে, ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা করোনায় ব্যবসা বন্ধ করেছেন । সিপিডি বলেছে, ৫৪ শতাংশ গৃহকর্মী এবং ১৯ শতাংশ পোশাকশিল্পের শ্রমিক বেকার হয়েছেন ।

দেশের প্রতি ১০ জন মানুষের অন্তত ৪ জনের দৈনিক আয় ২ ডলারের কম, যা দিয়ে এই দুর্মূল্যের বাজারে কর্মহীন সদস্যসহ পরিবার নিয়ে চলা যায় না । বিপুল পরিমাণ মানুষ তাই শহরের তল্পিতল্পা গুটিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছেন । এ অবস্থায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্যও আর বিশ্বাসযোগ্য নয় । বরং এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, বর্তমানে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত-উভয় মূল্যস্ফীতিই দুই অঙ্কের ঘরে আছে ।

অর্থবছরের দুটি প্রান্তিকে পরপর ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি করলে একটি দেশের অর্থনীতিকে মন্দাকবলিত ধরা হয় । ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরের পর থেকে টানা প্রায় এক বছর বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি মন্দাগ্রস্ত ছিল । ২০২০-এর নভেম্বর থেকে ২০২১-এর মার্চ সময়কালে অর্থনীতির কয়েকটি খাত পুনরুদ্ধারের ধারায় ফিরে এলেও সার্বিক পুনরুদ্ধার হয়নি ।

এরই মধ্যে নতুন করে শুরু হয়েছে লকডাউন । সম্পূর্ণ প্রস্তুতিহীন এই লকডাউনে ভাসমান ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়বেন । এ অবস্থায় চলমান ধারার বাজেট বাদ দিয়ে মন্দা (ক্রাইসিস) বাজেট ঘোষণাই যুক্তিযুক্ত । শুধু কিছু অগ্রাধিকার প্রকল্প রেখে বাদবাকি সব ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাদ দিতে হবে । বিদ্যুৎ ও মৌলিক সেবা নয়, এমন খাতের ভর্তুকি বন্ধের স্থায়ী কৌশল খোঁজা উচিত । জনস্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাত, দরকারি সরকার পরিচালনা খরচ ইত্যাদি ছাড়া সরকারের বাদবাকি অপখরচের প্রকল্প থামাতে হবে ।

শ্রমবাজারের ৮৫ থেকে ৮৯ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত । এই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে, ক্ষুদ্র বা ব্যষ্টিক অর্থনীতিকে বাঁচানো মন্দাকবলিত অর্থনীতির মূল কাজ । কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপ, সতর্কতা, ঋণ নিশ্চয়তা স্কিম গঠনসহ নানা উদ্যোগের পরও কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে প্রণোদনার ঋণ বিতরণে কেন গতি আসেনি? কেন প্রকৃত ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না?

এগুলোর ডিজিটাল সমাধান ও নতুন কৌশল বের করাও জরুরি । মানুষ বাঁচাতে হলে কৃষিসহ ক্ষুদ্র শিল্প, প্রকৃত ব্যবসা ও আঞ্চলিক অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে । মন্দায় বড়লোককে ঋণ দিলে সে বিনিয়োগ করে না, বরং ভোগ করে । গত এক বছরের সরকারি অভিজাত ঋণ প্যাকেজের অভিজ্ঞতা অন্তত তাই । ত্রাণ ও ঋণ প্রণোদনাগুলো গরিব ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর হাতে পৌঁছেনি, পেয়েছেন মূলত দলীয় নেতা-কর্মীরা ।

মহামারির সময়ে অপখরচের লাগাম টেনে ধরতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবী, বেকার, কর্মহীন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের যথাযথ তথ্যশালা তৈরি করে সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো উচিত । দরিদ্র হয়ে পড়া মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পকে উদ্ধার করাই মূল দায়িত্ব । এর জন্য দরিদ্র হয়ে পড়া প্রান্তিক ভাসমান নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পমালিক এবং কিছুদিন আগের গরম বাতাসে ধান পুড়ে যাওয়া কৃষকের নিখুঁত ডিজিটাল তথ্যশালা তৈরি করতে হবে ।

দলীয় নেতা-কর্মীনির্ভর ত্রাণব্যবস্থা মহামারিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখতে পারে না । কে গরিব, কে ক্ষতিগ্রস্ত, কে কর্মহীন-এসব প্রশ্নের উত্তর দলীয় চ্যানেলে নয়, স্বচ্ছ ডিজিটাল তথ্যশালার মাধ্যমে আসতে হবে । দরকার জাতীয় পরিচয়পত্রনির্ভর স্বচ্ছ ও স্বয়ংক্রিয় তথ্যশালা, যার বিপরীতে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় দুর্নীতিমুক্তভাবে ভাতা ও ঋণ দেওয়া যাবে ।

প্রান্তিক, নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত বাঁচানো এখন একেবারে ফরজ হয়ে গেছে । এদের জীবন ও জীবিকা একসঙ্গে বাঁচাতে পারলেই বাঁচবে অর্থনীতি, বাঁচবে দেশ ।

১০৭৩ বার পঠিত

শেয়ার করুন

Picture of ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ, ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম (মনোহরগঞ্জ) উপজেলার খিলা ইউনিয়নের বান্দুয়াইন গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক। তিনি ১৯৯৭ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৯৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ অধ্যয়ন করেন। ২০০৫ থেকে অদ্যাবধি টেলি যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার সল্যুশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডস-এ কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে তিনি এলকাটেল লুসেন্ট বাংলাদেশ, টেলিকম মালয়েশিয়া বাংলাদেশ একটেল (বর্তমান রবি), এমটিএন কমিউনিকেশনস নাইজেরিয়া, এরিকসন নাইজেরিয়া, এরিকসন ঘানা, এরিকসন দক্ষিণ কোরিয়া, এরিকসন নেদারল্যান্ডস এ কাজ করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। জনাব ফয়েজ তৈয়্যব একজন ‘টেকসই উন্নয়ন ও অবকাঠামো’ বিষয়ক প্রবন্ধকার। টেকসই উন্নয়নের নিরিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের কাঠামোগত সংস্কার, সুশাসন, প্রতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং প্রযুক্তির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় জ্ঞানের সমন্বয় ঘটিয়ে বাংলাদেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধানের পর্যালোচনা করে থাকেন। তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। তাই এসকল বিষয়ে তাঁর নিজস্ব মুক্ত চিন্তা স্বাধীন ভাবে প্রকাশের প্রয়াস করেন। তাঁর লিখায় যা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পায়ঃ সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্ট এর নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটি, অর্থনীতি শিক্ষা স্বাস্থ্য ও কৃষি ইত্যাদি খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারিগরি প্রস্তুতি, ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিক ম্যানেজমেন্টের কারিগরি দিক এবং অটোমেশন। সামাজিক সংযোগের দিক থেকে উনি একজন টেকসই উন্নয়ন কর্মী, ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। গ্রীণপিস নেদারল্যান্ডস এর সদস্য। দৈনিক বণিকবার্তা, দৈনিক শেয়ারবিজ ও দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনের উপ সম্পাদকীয় কলাম লেখক।
Picture of ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়ব

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ, ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলার লাকসাম (মনোহরগঞ্জ) উপজেলার খিলা ইউনিয়নের বান্দুয়াইন গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক। তিনি ১৯৯৭ সালে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৯৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ অধ্যয়ন করেন। ২০০৫ থেকে অদ্যাবধি টেলি যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হিসবে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সিনিয়র সফটওয়্যার সল্যুশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডস-এ কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে তিনি এলকাটেল লুসেন্ট বাংলাদেশ, টেলিকম মালয়েশিয়া বাংলাদেশ একটেল (বর্তমান রবি), এমটিএন কমিউনিকেশনস নাইজেরিয়া, এরিকসন নাইজেরিয়া, এরিকসন ঘানা, এরিকসন দক্ষিণ কোরিয়া, এরিকসন নেদারল্যান্ডস এ কাজ করেছেন। পেশাগত জীবনে তিনি দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডিজাইন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। জনাব ফয়েজ তৈয়্যব একজন ‘টেকসই উন্নয়ন ও অবকাঠামো’ বিষয়ক প্রবন্ধকার। টেকসই উন্নয়নের নিরিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের কাঠামোগত সংস্কার, সুশাসন, প্রতিষ্ঠানিক শুদ্ধিকরন এবং প্রযুক্তির কার্যকরীতার সাথে স্থানীয় জ্ঞানের সমন্বয় ঘটিয়ে বাংলাদেশের ছোট বড় সমস্যা সমাধানের পর্যালোচনা করে থাকেন। তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। তাই এসকল বিষয়ে তাঁর নিজস্ব মুক্ত চিন্তা স্বাধীন ভাবে প্রকাশের প্রয়াস করেন। তাঁর লিখায় যা বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পায়ঃ সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্ট এর নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটি, অর্থনীতি শিক্ষা স্বাস্থ্য ও কৃষি ইত্যাদি খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারিগরি প্রস্তুতি, ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিক ম্যানেজমেন্টের কারিগরি দিক এবং অটোমেশন। সামাজিক সংযোগের দিক থেকে উনি একজন টেকসই উন্নয়ন কর্মী, ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। গ্রীণপিস নেদারল্যান্ডস এর সদস্য। দৈনিক বণিকবার্তা, দৈনিক শেয়ারবিজ ও দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনের উপ সম্পাদকীয় কলাম লেখক।

মতামত প্রকাশ করুন

Scroll to Top