মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী বিপর্যয় ডেকে এনেছে পূঁজিবাদী সভ্যতা। বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে যে শ্রেণী বৈষম্য মানবতার ইতিহাসে তা আর কক্ষনো দেখা দেয়নি। সমগ্র মানবতা আজ পুঁজিবাদী সভ্যতার ফাঁদে বন্দী। ১৮৬০ সালে শিল্প উন্নত দেশ সমূহ দরিদ্র দেশ সমূহের তুলনায় যেখানে ৩ গুন বেশী ধনী ছিল সময়ের ব্যবধানে সেই দেশ সমূহ ১৯৬০ সালে এসে ৬০ গুন বেশী ধনী দেশে রূপান্তরিত হয়। বর্তমান সময়ের তারা প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ গুন বেশী ধনী। আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থনীতির জনক বলা হয় অ্যাডাম স্মিথকে। তার Wealth of Nations বইকে আধুনিক অর্থশাস্ত্রের বাইবেল বলা হয়ে থাকে। অ্যাডাম স্মিথ মূলত প্রভাবিত হয়েছিলেন হল্যান্ডের দার্শনিক Bernard Mandeville দ্বারা এবং বিশেষ করে তার লেখা বই “The Fable of the Bees or Private Vices, Public Benefits” কে তিনি পরবর্তীতে থিওরিতে পরিণত করে পুঁজিবাদকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেন।
এটাই হল ইসলামের মূল কথা। ইসলাম আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছে মানুষের সেবাই হল স্রষ্টার সেবা। মৌমাছি যেমন উত্তম জিনিস উৎপাদন করে নিজে খায় এবং অন্যকে খাওয়ার সুযোগ করে দেয় একজন মুসলমানও তেমন হবে। ইসলাম চায় মানুষ পরস্পরের প্রতি নির্দয় ও নিষ্ঠুর হবার পরিবর্তে সহধর্মী ও সহযোগী হবে। ইসলাম একদিকে আখলাকের শিক্ষার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে অক্ষম ও পেছনে পড়ে থাকা মানুষের আশ্রয় প্রদানের মানসিকতা সৃষ্টি করতে চায়; অপরিকে সমাজে একটি শক্তিশালী সংস্থা গড়ে তুলতে চায় যে অক্ষম ও অসহায় লোকদের সাহায্য করার জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ইসলাম ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে এমন ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যাতে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকে। আর সামাজিক স্বার্থের জন্যও তার স্বাধীনতা কোন ক্ষতির কারণ না হয় এবং অবশ্যই কল্যাণ হব হয়।