ড.মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ
ড: মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ,বুদ্ধিবৃত্তি ও জ্ঞানচর্চার জগতে যিনি ইসলামের সোনালী ঐতিহ্য কে ফিরিয়ে এনেছিলেন।জ্ঞান সাধনায় একাগ্রতা,সত্যনিষ্ঠা,বিশ্বকোষসদৃশ পাণ্ডিত্য এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রে তার অবদান অতুলনীয়।তিনি ছিলেন একাধারে মুহাদ্দিস,দায়ী, ফকীর,ওয়ালিউল্লাহ,বুদ্ধিজীবী,আইনবিদ,গবেষক,ইসলামী আইনের পণ্ডিত,রাষ্ট্রদূত,রাজনৈতিক মুহাজির এবং একজন বিশিষ্ট লেখক।১৬৫ টি গ্রন্থের রচয়িতা এবং প্রায় ১০০০০ টি গবেষণাপত্রের নিবন্ধকার হিসেবে ইসলামের জ্ঞান জগতের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোকপাত করেছেন।প্রায় ২২ টি ভাষার উপর তার স্বচ্ছন্দ অধিকার ছিলো।
তিনি শুধুমাত্র ইসলামিক আইন নিয়েই নাড়াচাড়া করেননি! ইতিহাস,দর্শন, নৌবিদ্যা,যুদ্ধবিদ্যা,জীবনচরিতও পর্যালোচনা করেছেন। তার লেখনী তে যুক্তিবাদী ও বিশ্লেষণধর্মী মনের পরিচয় স্পষ্ট।বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে ইসলামী উৎস থেকে পাওয়া প্রাসঙ্গিক তথ্য তিনি সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। মুসলিম আইন,সীরাত ও হাদীস শাস্ত্রে তার বুদ্ধিজীবিতা ছিলো ঈর্ষণীয়।
১৯০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, ব্রিটিশ ভারতের ডেকান অঞ্চলের অর্থাৎ তৎকালীন হায়দারাবাদ রাজ্যের রাজধানী হায়দারাবাদের (বর্তমানে হায়দরাবাদ,তেলেঙ্গানা,ভারত) পুরনো এলাকা মোহাল্লা ফিলখানায় তার জন্ম। শৈশবে পারিবারিক পরিবেশে তার লেখাপড়ায় হাতেখড়ি। তারপর ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষা লাভ করেন দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে এবং এখান থেকেই তিনি মৌলভি নিজামী ডিগ্রী অর্জন করেন।এরপর ১৯৩০ সালে তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক আইনে এম এ ও এল এল বি ডিগ্রী নেন।তারপর ১৯৩৩ সালে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি ফিল এবং ১৯৩৫ সালে প্যারিসের সোর বর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি লিট ডিগ্রী অর্জন করেন।অতঃপর ১৯৩৬ সালে দেশে ফিরে উসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের যোগদান করেন এই বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার।
তিনি আল-ফারাবি ,আল-গাজালী ও শাহ ওয়ালীউল্লাহর চিন্তাভাবনার ধারাকে পুনর্জীবিত করেছিলেন। যদিও ডক্টর হামিদুল্লাহ জ্ঞানের ইসলামীকরণে জাতীয় অলংকারিক শব্দ ব্যবহার করেননি।কিন্তু তার লেখালেখি নিরবে এই চেতনাকেই সমর্থন করে গেছে। মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনের উপর বড় বড় কাজ করার পাশাপাশি তিনি অনেক বই নতুন করে সম্পাদনা করেছেন যা কিনা ইসলামের প্রাথমিক যুগের যুদ্ধ কৌশল ও আন্ত:গোত্রীয় সম্পর্কের উপর আলো ফেলেছে।
ডক্টর হামিদুল্লাহকে আধুনিককালে মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনের নির্মাতা বলা যেতে পারে। তাছাড়া তার অন্যতম প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল সীরাহ ও আল কুরআন। মুসলিম দুনিয়ায় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন কে কেন্দ্র করে যে বিপুল সাহিত্য রচিত হয়েছে হামিদুল্লাহ তার আধুনিক সমৃদ্ধিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
হায়দারাবাদ দখল হয়ে যাওয়ার পর জীবনের বাকি ৬০ বছর ডক্টর হামিদুল্লাহ রিফিউজি হিসেবে প্যারিসে কাটিয়ে দেন।প্যারিসে অবস্থান করলেও তার মন পড়েছিল মুসলিম উম্মাহর সাথেই। মুসলিম দুনিয়ার কোন আমন্ত্রণ পেলে বা কোনো সংকটে তার ডাক পড়লেই তিনি সেখানে ছুটে যেতেন।কিছুদিন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইলাহিয়াৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। তিনি ছিলেন সেকালের একজন ইসলামের ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূত।২০০২ সালের ১৭ ই ডিসেম্বর এই বিনম্র চিত্ত ফকীর ও জীবন সাধক ইন্তেকাল করেন।
মাযহাব, তরীকা ও ফিরকার নীতি দ্বারা তিনি কখনোই ইসলামকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেননি। হানাফী,হাম্বলী,মালেকী এমনকি শিয়া আইনগুলো নিয়েও তিনি নির্বিবাদে কাজ করেছেন। এসব বিষয়ে তার মধ্যে কোন সংকীর্ণতা কাজ করেনি কখনও কারণ তিনি মনে করতেন ইসলামের উদারতা নীতি কে ফিরিয়ে আনা তখনকার সময়ের অন্যতম দাবী ।সংকীর্ণতা দিয়ে ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব না।
তার উল্লেখযোগ্য কিছু বই হলো....
• International Law: It's Principles and Precedents.
• Neutrality in Islamic International Law
• The System of Government in the Time of the Prophet.
• The political life of Noble Messanger.
• Emergence of Islam.
ড.মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ
ড: মুহাম্মদ হামিদুল্লাহ,বুদ্ধিবৃত্তি ও জ্ঞানচর্চার জগতে যিনি ইসলামের সোনালী ঐতিহ্য কে ফিরিয়ে এনেছিলেন।জ্ঞান সাধনায় একাগ্রতা,সত্যনিষ্ঠা,বিশ্বকোষসদৃশ পাণ্ডিত্য এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রে তার অবদান অতুলনীয়।তিনি ছিলেন একাধারে মুহাদ্দিস,দায়ী, ফকীর,ওয়ালিউল্লাহ,বুদ্ধিজীবী,আইনবিদ,গবেষক,ইসলামী আইনের পণ্ডিত,রাষ্ট্রদূত,রাজনৈতিক মুহাজির এবং একজন বিশিষ্ট লেখক।১৬৫ টি গ্রন্থের রচয়িতা এবং প্রায় ১০০০০ টি গবেষণাপত্রের নিবন্ধকার হিসেবে ইসলামের জ্ঞান জগতের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোকপাত করেছেন।প্রায় ২২ টি ভাষার উপর তার স্বচ্ছন্দ অধিকার ছিলো।
তিনি শুধুমাত্র ইসলামিক আইন নিয়েই নাড়াচাড়া করেননি! ইতিহাস,দর্শন, নৌবিদ্যা,যুদ্ধবিদ্যা,জীবনচরিতও পর্যালোচনা করেছেন। তার লেখনী তে যুক্তিবাদী ও বিশ্লেষণধর্মী মনের পরিচয় স্পষ্ট।বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে ইসলামী উৎস থেকে পাওয়া প্রাসঙ্গিক তথ্য তিনি সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। মুসলিম আইন,সীরাত ও হাদীস শাস্ত্রে তার বুদ্ধিজীবিতা ছিলো ঈর্ষণীয়।
১৯০৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, ব্রিটিশ ভারতের ডেকান অঞ্চলের অর্থাৎ তৎকালীন হায়দারাবাদ রাজ্যের রাজধানী হায়দারাবাদের (বর্তমানে হায়দরাবাদ,তেলেঙ্গানা,ভারত) পুরনো এলাকা মোহাল্লা ফিলখানায় তার জন্ম। শৈশবে পারিবারিক পরিবেশে তার লেখাপড়ায় হাতেখড়ি। তারপর ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষা লাভ করেন দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে এবং এখান থেকেই তিনি মৌলভি নিজামী ডিগ্রী অর্জন করেন।এরপর ১৯৩০ সালে তিনি ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক আইনে এম এ ও এল এল বি ডিগ্রী নেন।তারপর ১৯৩৩ সালে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি ফিল এবং ১৯৩৫ সালে প্যারিসের সোর বর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি লিট ডিগ্রী অর্জন করেন।অতঃপর ১৯৩৬ সালে দেশে ফিরে উসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের যোগদান করেন এই বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার।
তিনি আল-ফারাবি ,আল-গাজালী ও শাহ ওয়ালীউল্লাহর চিন্তাভাবনার ধারাকে পুনর্জীবিত করেছিলেন। যদিও ডক্টর হামিদুল্লাহ জ্ঞানের ইসলামীকরণে জাতীয় অলংকারিক শব্দ ব্যবহার করেননি।কিন্তু তার লেখালেখি নিরবে এই চেতনাকেই সমর্থন করে গেছে। মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনের উপর বড় বড় কাজ করার পাশাপাশি তিনি অনেক বই নতুন করে সম্পাদনা করেছেন যা কিনা ইসলামের প্রাথমিক যুগের যুদ্ধ কৌশল ও আন্ত:গোত্রীয় সম্পর্কের উপর আলো ফেলেছে।
ডক্টর হামিদুল্লাহকে আধুনিককালে মুসলিম আন্তর্জাতিক আইনের নির্মাতা বলা যেতে পারে। তাছাড়া তার অন্যতম প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল সীরাহ ও আল কুরআন। মুসলিম দুনিয়ায় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন কে কেন্দ্র করে যে বিপুল সাহিত্য রচিত হয়েছে হামিদুল্লাহ তার আধুনিক সমৃদ্ধিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
হায়দারাবাদ দখল হয়ে যাওয়ার পর জীবনের বাকি ৬০ বছর ডক্টর হামিদুল্লাহ রিফিউজি হিসেবে প্যারিসে কাটিয়ে দেন।প্যারিসে অবস্থান করলেও তার মন পড়েছিল মুসলিম উম্মাহর সাথেই। মুসলিম দুনিয়ার কোন আমন্ত্রণ পেলে বা কোনো সংকটে তার ডাক পড়লেই তিনি সেখানে ছুটে যেতেন।কিছুদিন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইলাহিয়াৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। তিনি ছিলেন সেকালের একজন ইসলামের ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূত।২০০২ সালের ১৭ ই ডিসেম্বর এই বিনম্র চিত্ত ফকীর ও জীবন সাধক ইন্তেকাল করেন।
মাযহাব, তরীকা ও ফিরকার নীতি দ্বারা তিনি কখনোই ইসলামকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেননি। হানাফী,হাম্বলী,মালেকী এমনকি শিয়া আইনগুলো নিয়েও তিনি নির্বিবাদে কাজ করেছেন। এসব বিষয়ে তার মধ্যে কোন সংকীর্ণতা কাজ করেনি কখনও কারণ তিনি মনে করতেন ইসলামের উদারতা নীতি কে ফিরিয়ে আনা তখনকার সময়ের অন্যতম দাবী ।সংকীর্ণতা দিয়ে ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব না।
তার উল্লেখযোগ্য কিছু বই হলো....
• International Law: It's Principles and Precedents.
• Neutrality in Islamic International Law
• The System of Government in the Time of the Prophet.
• The political life of Noble Messanger.
• Emergence of Islam.
- All Posts
- আন্তর্জাতিক রাজনীতি
- চিন্তা ও দর্শন
- ফিচারড
- বাংলাদেশ সম্পর্কিত রিপোর্ট ও লেখা
- বিজ্ঞাপন
- ব্যক্তিত্ব
- মুসলিম উম্মাহ
- রাজনীতি ও অর্থনীতি
- সভ্যতা
- সমাজ ও সংস্কৃতি
- সাক্ষাৎকার ও ব্যক্তিত্ব
- Back
- রাজনীতি
- অর্থনীতি
- Back
- দর্শন
- তাসাউফ ও আধ্যাত্মিকতা
- ইসলামী দর্শন
- উসূল ও মেথডোলজি
- আখলাক ও নন্দনতত্ত্ব
- ইলমুল কালাম
- ইসলামী চিন্তা
- মাকাসিদ আশ শারীয়াহ
- Back
- ইতিহাস
- সমাজবিজ্ঞান
- Back
- বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলন
- উপমহাদেশ
- Back
- কৃষি
- বাংলাদেশ
- Back
- বই পর্যালোচনা
- Back
- সংস্কৃতি
- শিল্পকলা
- শহর ও স্থাপত্য
- সিনেমা পর্যালোচনা
- মিউজিক
- সাহিত্য


