জ্ঞান সম্রাট আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ হলেন গোটা দুনিয়ার ইসলামী আন্দোলনের একজন মহান পুরুষ। বিংশ শতাব্দীতে জন্ম লাভ করা এই মহাপুরুষ দুনিয়াবাসীর সামনে পেশ করেছেন অনেক বিরল দৃষ্টান্ত। বসনিয়া হেরসেক এর স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা, যার হাত ধরেই বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা মুক্তি পেয়েছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। বিশ্ব মোড়লদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে আজকে সিরিয়া ও ফিলিস্তিন সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে মুসলিম নিধন।
আজকের এই লেখায় আমি উল্লেখ করতে চাই তৎকালীন বিশ্ব মোড়লদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে তাদের বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে জয়ী হয়ে শত বছরের পরাধীনতার গ্লানি থেকে তিনি কিভাবে মুক্ত করেছিলেন বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে। আশা করি মুসলিম বিশ্বের আজকের এই দুর্দশার দিনে এই মহা পুরুষ একটু হলেও আমাদের মাঝে যোগাবেন সাহস ও উদ্দীপনা। যা এনে দিবে একটু আত্মবিশ্বাস যে, ইসলাম কোন পরাজিত সভ্যতা নয়। আমরা যদি ঈমানী শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি, তাহলে আবারও সারা দুনিয়ায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
জন্ম ও শৈশবকাল :
আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ ১৯২৫ সালে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এর উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বস্নাকা ক্রুপা শহরে জন্ম গ্রহন করেন। তার পরিবার ছিল ইসলামী শিক্ষা দীক্ষায় ঐতিহ্যমণ্ডিত একটি পরিবার। কিন্তু আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ ইসলাম বিরোধী একটি বৈরী পরিবেশ ও ইউরোপিয়ানদের দারা দখলকৃত একটি ভূমিতে বেড়ে উঠেন। সারায় বসনিয়াতে জার্মান একটি স্কুলে তিনি তার মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। একজন মেধাবী ও সুশৃঙ্খল ছাত্র হিসাবে সবার কাছে ছিলেন অতি পরিচিত।
তিনি তাঁর স্কুল জীবনেই পাশ্চাত্য ও ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানের জন্য তার সহপাঠীদের কাছে ছিলেন অতীব পরিচিত। সেই সময়েই তিনি তাঁর কয়েকজন বন্ধুর সাথে মিলে গড়ে তোলেন মেলাদি মুসলমানি (মুসলিম যুবসঙ্ঘ) নামে একটি সংগঠন। তিনি যখন এই সংগঠন কায়েম করেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। কিন্তু তাঁর জ্ঞান ও চিন্তার প্রখরতার কারণে সবার কাছেই ছিলেন অনেক প্রিয় একজন মানুষ। এ কারণেই তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটি একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ক্লাব না হয়ে পরিণত হয় সক্রিয় একটি সংগঠনে। যার কারনে এটি হয়ে উঠে ছাত্রদের ক্যারিয়ার তৈরি ও গঠন মুলক কাজের অন্যতম সূতিকাগার। অপরদিকে মেয়েদের জন্য গড়ে তোলা হয় আলাদা একটি সংগঠন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই সংগঠনটি দুঃস্থ মানুষের পাশে এসে দাড়ায় এবং বিভিন্ন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করতে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চ্যালেঞ্জ :
আলিয়া ইজ্জেতবেভভিচ এর প্রতিষ্ঠিত এই মুসলিম যুবসংঘটি যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তাঁর যুগান্ততকারী ভূমিকা তাকে ও তাঁর সংগঠনকে সবার সামনে নিয়ে আসে। এই যুদ্ধে জার্মান সেনাবাহিনী বসনিয়াতে ১ লাখেরও বেশী মুসলমানকে হত্যা করে।
কম্যুনিস্ট শাসনের জুলুম নির্যাতন :
১৯৪৬ শালের ১৩ জানুয়ারি বসনিয়া পুনরায় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। কিন্তু এই সংগ্রামে বামপন্থি নেতৃত্বের আধিপত্য থাকায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বামপন্থিরা ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে।
বসনিয়া একটি সায়ত্ত্বশাসিত দেশ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। একটি চুক্তি অনুযায়ী যুগোস্লাভিয়ার সাথে আরও ৬ টি দেশ মিলে একটি স্বাধীন দেশের মর্যাদা লাভ করবে। বসনিয়া হবে এই ৬ টি দেশের একটি।
কম্যুনিস্টরা ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই ধর্মের বিরুদ্ধে বিশেষ করে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ ইসলামী আন্দোলনের নেতা হওয়ায় ও নাস্তিক্কবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সোচ্চার ভুমিকার কারণে তিনি কম্যুনিস্টদের টার্গেটে পরিণত হন। এই কারনেই ১৯৪৯ সালে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে এবং তিনি একাধারে ৫ বছর বন্দি জীবন কাটান।
আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচের উপর জুলুম নির্যাতন ১৯৫৩ সালে টিটু (Titu) ক্ষমতায় আসার পর আরও বহু গুনে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু তিনি এই সকল জুলুম নির্যাতনের পরেও তাঁর বিপ্লবী ভুমিকা অব্যাহত রেখে জনগনের মধ্যে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের কাজকে পরিচালনা করে চিন্তার রাজ্যে বিপ্লব ঘটানোর কাজ অব্যাহত রাখেন। তাঁর এই সময়ে তিনি অন্য ইসলামী দলের নেতা হাসান দুজুর সাথে মিলে তাঁর কাজের গতি বৃদ্ধি করেন।
১৯৭৪ সালে টিটুর নতুন সংবিধান প্রবর্তনের পর ইসলামী আন্দোলনের উপর জুলুম নির্যাতন কমে আসায় অন্যান্য ইসলামী সংগঠন গুলিও তাদের কাজ শুরু করে। তার এই সময়ে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসা নতুন করে উন্মুক্ত হয়।অল্প পরিমানে হলেও জুলুম নির্যাতনের মাত্রা কমে যাওয়ায় এবং অন্যান্য সকল ইসলামী সংগঠনের কাজের ফলে জনগনের মধ্যে ইসলামের একটি জাগরণ সৃষ্টি হয়।
টিটুর মৃত্যু ও আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচের ইসলামী মেনিফেস্টো (Islamic Menifesto):
১৯৮০ সালে টিটুর মৃত্যুর পর ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট এর বিষয়ে একটি চুক্তি প্রস্তাবিত হয়। আর এটি হলো ৬ টি স্বায়ত্ত্বশাসিত দেশের প্রেসিডেন্টগণ সবাই ১ বছর করে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তার এই চুক্তির কারনে সল্প পরিসরে হলেও গণতন্ত্র লাভবান হয়। কারন এই চুক্তির আলোকে সকলেই কাজ করার সুযোগ পায়।
তার এই সময়েই আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ এর ছেলে তার পিতার বিভিন্ন সময়ে লেখা প্রবন্ধ সমূহকে ১৯৮৩ সালে Islamic Menifesto নামে বই আকারে প্রকাশ করেন।১৯৭০ সালে Islami Declartion নামে একটি বই প্রকাশ হয়।পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে Islamic Menifesto নামে এই বই প্রকাশিত হওয়ায় ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রে রেডিকেল ইসলাম এর প্রবর্তন করতে চাচ্ছেন, এই অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচকে আদালতে নেওয়া হলে তিনি উচ্চস্বরে ঘোষণা করেন যে, আমাদের বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন করে বসনিয়া হেরসেক কে একটি কল্যাণ মূলক ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এর পর তারা তাকে এক অন্যায় আদেশ এর মাধ্যমে ১৪ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে এবং তাঁর বই নিষিদ্ধ করে। এতে করে এ বই এর প্রচার ও প্রকাশনা গোপনে আরও বহু গুণে বৃদ্ধি পায় এবং এ বই লেখার কারণেই লেখক আজ কারাগারে এই বিষয়টি পাঠকের মনে এক নীরব বিপ্লবের সূচনা করে।
জেল জীবন :
উচ্চ আদালত তার ১৪ বছরের সাজাকে কমিয়ে ১১ বছরে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে এক ক্ষমার মাধ্যমে তাকে মুক্তি দান করে। তাঁর এই ৫ বছরের জেল জীবনে আলিয়া নিজস্ব চিন্তার রাজ্যে বিপ্লব ঘটান। তাঁর আগের চিন্তা গুলাকে সংশোধন করে সেগুলাকে আরও মজবুত যুক্তির উপর দাঁড় করান। তাঁর যেই যুক্তি ভিত্তিক লেখনীর কারণে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করে, তিনি তাঁর সেই যুক্তিকে শাণিত করে কারাগারে বসেই লিখেন তাঁর ঐতিহাসিক গ্রন্থ Islam between East and West। তাঁর এক বন্ধু অক্লান্ত পরিশ্রম এর মাধ্যমে সব জায়গায় এই বইটিকে ছড়িয়ে দেন।
তিনি আলিয়ার এই বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষিত মুসলিমদেরকে আলিয়ার দলে ভিড়াতে থাকেন। সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে তাঁর এই জেল জীবন তাকে আরও বেশী জনপ্রিয় করে তুলে এবং তিনি সকলের মাঝে একজন স্কলার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর এই জনপ্রিয়তার দরুণ তিনি জেল থেকে বের হওয়ার পর জনগন তাকে একজন মহান নেতা হিসাবে বরণ করে নেয়। আর তিনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বসনিয়া হেরসেক এর স্বাধীনতা সংগ্রামকে আরও বেগবান করেন।
রাজনৈতিক জীবন :
আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ যখন জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল। যুগোস্লাভিয়াতে স্বাধীনতা সংগ্রাম মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল । অপরদিকে ফেডারেল রাষ্ট্র গুলোও একে একে স্বাধীনতার দিকে আগাতে থাকে। আলিয়া ইযযেতবেগভিচও বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাতে তাঁর নেতৃত্বে Democratic Action Party (PDA) নামে একটি দল গঠন করেন। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন এই দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে এবং আলিয়া প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। প্রথম বার নির্বাচন করেই তাঁর দল সরকার গঠন করে এবং পার্লামেন্টে ৮৬ টি আসন লাভ করে।
স্বাধীনতা সংগ্রাম :
১৯৯০ দশক এর দিকে যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন স্বাধীনতা সংগ্রামে সব চেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ফেডারেশন এর ৬ টি দেশ স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ১লা মার্চ ১৯৯২ সালের এক রেফারেনডাম এর মাধ্যমে তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
কারণ শতকরা ৬২% জনগন স্বাধীনতার পক্ষে তাদের মতামত বাক্ত করে। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই সার্বিয়া বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় হামলা করে মুসলিম নিধনের এক নতুন কালো অধ্যায়ের সূচনা করে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা একই ফেডারেশন এর দেশ ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম কে সাধুবাদ জানালেও মুসলিমদের দেশ বসনিয়া হেরসেক এর উপর সার্বিয়ার হামলা কে সাধুবাদ জানায়।
বসনিয়া হেরসেক এর দুর্দশায় নতুন মাত্রা যোগ করে ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনীর অধিকারী দেশ যুগোস্লাভিয়া। তারা সার্বিয়ার এই হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন জানিয়ে তাদেরকে সাহায্য করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কিছু সংগঠন ও ব্যক্তি ছাড়া এই সময়ের মধ্যে কোন মুসলিম দেশ নির্যাতিত বসনিয়ান মুসলিমদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
ফলে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু শহর কে দখল হয়ে যায়। এ আগ্রাসনে তারা লক্ষ লক্ষ মুসলিমকে হত্যা করে এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। বিশেষ ভাবে তারা ইসলামের ইতিহাস সম্বলিত বিভিন্ন স্থাপনা ও মসজিদ সমূহকে জ্বালিয়ে দেয়।এই সময় বিভিন্ন মুসলিম নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতা খুব একটা নতুন মাত্রা যোগ করতে পারেনি।
কারণ একথা সত্য যে, বাতিলরা কখনো মুখের কথায় তাদের জুলুম বন্ধ করে না। তাদের জুলুম কে বন্ধ করার জন্য তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করতে হয় এবং তারা কেবল মাত্র শক্তিকেই ভয় করে। ১৯৯৪ সালের শেষ নাগাদ মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ায় ২লাখ ৫০ হাজারে এবং সব মিলিয়ে ১ মিলিয়ন মুসলিম ক্ষতিগ্রস্থ হয় ও পঙ্গুত্ত্ব বরণ করে। এই সময়ে বসনিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন আলিয়া ইযযেতবেগভিচ। এই ভয়াবহতার মধ্যেও তিনি তাঁর নেতৃত্বের অসীম গুণাবলী দ্বারা ও সাহসিকতার সাথে তাঁর দেশের মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি তাঁর জাতিকে একত্রিত করে সার্বিয়ার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
ডেটন চুক্তি :
বসনিয়া হার্জেগোভিনার মুসলিমদের এই সংগ্রামে বিশ্বের মুসলিমগন তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। বিভিন্ন মুসলিম দেশের যুবকগণ বসনিয়ার মুসলিমদের সাথে কাধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। সংগ্রাম ও জিহাদের পাশাপাশি বসনিয়ান মুসলিমদেরকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়।
এক্ষেত্রে সব চেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তুরস্কের ইসলামী আন্দোলনের মহান নেতা প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান তিনি তুরস্ক থেকে হাজার হাজার যুবক পাঠান বসনিয়ান মুসলিম ভাইদের সাহায্য করার জন্য। তাঁর সম্পদের বিশাল এক অংশ দিয়ে বসনিয়ায় গড়ে তোলেন অস্ত্রাগার । ওয়াইসি ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের নিয়ে বসনিয়ান মুসলিমদের সাহায্যার্থে ভঙ্গ করেন জাতিসংঘের সকল চুক্তিকে। ইরানকে সাথে নিয়ে মনোবল বৃদ্ধি করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী মহান নেতা আলিয়া ইযযেতবেগভিচের। নাজমুদ্দিন এরবাকান তৎকালীন তুরস্ক সরকারকে বাধ্য করেন বসনিয়ান মুসলিমদের সাহায্য করতে।
আর এই সময়ে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সার্বিয়াকে তাদের একতরফা সমর্থন দিতে থাকে। তারা সার্বিয়ার সাথে চুক্তি করার জন্য বসনিয়াকে চাপ দিতে থাকে।পরবর্তীতে আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। কারন তিনি তাতে রাজি না হলে এই অসম যুদ্ধে নিরস্ত্র বসনিয়ানদের আরও হত্যার শিকার হতে হতো। অবশেষে ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।এই চুক্তিতে বসনিয়া পায় ৫১% ভুমি । আর ক্রোয়েশিয়াকে দেয় ৪৯% ভুমি এবং বিভিন্ন অসম চুক্তিতে বসনিয়াকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করায়।
মৃত্যু :
এই মহান মানুষ টি ১৯ অক্টোবর ২০০৩ সালে ৭৮ বছর বয়সে দুনিয়াবাসীকে কাঁদিয়ে চলে যান মহান মনিবের দরবারে।