আপনাদের স্বপ্ন কুদুস, আপনাদের ধ্যান ধারণা কুদুস, আপনাদের সংগ্রাম কুদুসের জন্য তাই আপনাদের প্রতি আমার সালাম। আপনারা হলেন জালিমের আতংক এবং মজলুমদের জন্য আশা তাই সালাম আপনাদের প্রতি। আপনাদের পূর্বপুরুষগণ দীর্ঘ ছয়শত বছর সমগ্র দুনিয়াকে আদালতের ভিত্তিতে শাসন করেছে, ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, আপনারা সেই মহাপুরুষদের উত্তরসূরি। জুলুম, নির্যাতন এবং দখলদারিত্ব যেন আজ জেরুজালেমের অপর নাম, এই অবস্থার উত্তরণ করে এই শহরকে শান্তি ও নিরাপত্ত্বার শহরে পরিবর্তন করে দারুস সালামে রুপান্তরিত করবেন আপনারাই। আমি এই সমাবেশ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শতাব্দীর চুক্তিকে শতাব্দীর আবর্জনা বলে আখ্যায়িত করছি। এই আবর্জনাকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিখিপ্ত করবেন আপনারাই।
সংগ্রামী ভাইয়েরা আমার,
আজ আমরা কুদুসের জন্য, মসজিদে আকসার জন্য, রামাল্লাহর জন্য, পশ্চিম তীরের জন্য এবং গাজার জন্য আজকের এই ময়দানে সমবেত হয়েছি। আজ আমরা এমন এক স্বাধীন ফিলিস্তিনের জন্য সমবেত হয়েছি যে স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে ‘আল-কুদুস’। আজকের এই মহাসমাবেশ কি শুধুমাত্র কুদুস ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ?
– না।
আজকের এই মহাসমাবেশ দুনিয়ার সকল নির্যাতিত ও নিপীড়িতদের জন্য, আজকের এই মহা সমাবেশ ইদলিবের জন্য, পূর্ব তুর্কিস্তানের জন্য, কাশ্মীরের জন্য এবং আরাকানের জন্য। ইস্তানবুলের আজকের এই মহাসমাবেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদী ও জুলুমের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইন্তিফাদার ডাক দিচ্ছি।
এই ময়দানে উপস্থিত লাখো মানুষের আত্মবিশ্বাস ও চেতনা দেখে বলতে চাই, ‘ হে জালিমরা, হে সাম্রাজ্যবাদীরা, হে যায়নবাদীরা, ফিলিস্তিন শুরু থেকে ইসলামের শহর এবং কিয়ামত পর্যন্ত ইসলামেরই থাকবে ইনশাল্লাহ’। কারণ এই ময়দানে এমন মহাপুরুষদের উত্তরসূরীরা উপস্থিত, যাদের পূর্বসূরীরা সাম্রাজ্যবাদীদের দালালী করেনি বরং তারা সাম্রাজ্যবাদকে পরাজিত করে বিশ্বের ইতিহাসকে নতুন করে রচনা করেছিল। এই ময়দানে সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী, ফাতিহ সুলতান মেহমেদ এর উত্তরসূরীরা উপস্থিত হয়েছে। ‘হায়াত হল ঈমান ও জিহাদ’ এই কথা বলে সকল কিছু দিয়ে আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী নাজমুদ্দিন এরবাকানের উত্তরসূরীরা উপস্থিত।
প্রিয় ভাইয়েরা,
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু যে প্ল্যান মুসলিম উম্মাহ ও ফিলিস্তিনের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেই প্ল্যানের মূল লক্ষ্য হল ফিলিস্তিনকে সম্পূর্ণভাবে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া। এই প্ল্যানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাংগুলী দেখানো হয়েছে।সকল ধরণের মানবিক মূল্যবোধকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই প্ল্যান শান্তি নয় নতুন করে যুদ্ধের ময়দান প্রস্তুত করেছে। এটা শতাব্দীর চুক্তি নয়, এটা হল শতাব্দীর বিশ্বাসঘাতকতা, এটা হল শতাব্দীর নীলনকশা, এটা হল শতাব্দীর স্বেচ্ছাচারিতার চুক্তিপত্র। এই বিশ্বাসঘাতকতার চুক্তিপত্র ছিঁড়ে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করা হবে কারণ এটার উপযুক্ত স্থান ডাস্টবিন। বলা হচ্ছে যে, এই প্ল্যান অনুসারে দুইটি ভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। একটি ইসরাইল অপরটি নাকি ফিলিস্তিন। তারা তাদের পরিকল্পনা মাফিক কেমন একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে? তাদের মতে ফিলিস্তিন এমন একটি রাষ্ট্র হবে,
১। যে রাষ্ট্রের কোন সেনাবাহিনী থাকবে না,
২। যে রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কোন ভূখণ্ড থাকবে না,
৩। যে রাষ্ট্রের বর্ডার গেট থাকবে না,
৪। মসজিদে আকসা সহ সমগ্র কুদুস ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৫। এমনকি এই রাষ্ট্রের কোন রাজধানীও থাকবে না। কারণ তথা কথিত এই রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে যে স্থানকে নির্ধারণ সেটাও ইসরাইলেরই নিয়ন্ত্রণে থাকবে!
এছাড়াও, এই চুক্তিপত্রে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঘুষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাদের কথামত ফিলিস্তিন যদি তাদের এই সকল শর্ত সমূহকে গ্রহন করে তাহলে তারা নাকি ফিলিস্তিনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিবে। আমি এই সকল অর্থকে ঘুষ হিসেবে আখ্যায়িত করছি। এরবাকান হোজার ভাষায় বলতে চাই, ‘ আমাদেরকে ৫০ বিলিয়ন কেন, ১৫০ বিলিয়ন কেন, দুনিয়ার সকল সম্পদ এনেও যদি আমাদের সামনে বিছিয়ে দাও তবুও এক বিন্দু পরিমাণ মাটিও তোমাদের কাছে বিক্রি করা হবে না’। জান্নাত মাকান সুলতান আব্দুল হামিদ হানের ভাষায় বলতে চাই, ‘এই সকল ভূমি রক্তের বিনিময়ে ক্রয় করা হয়েছে। রক্তের বিনিময়ে কেনা ভূমি অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করা যায় না। রক্ত দিয়ে কিনেছি রক্ত দিয়েই বিক্রি করব’।
প্রিয় ভাইয়েরা,
যারা অতীত সম্পর্কে অজ্ঞ তারা আজকের ঘটনা প্রবাহকে বুঝতে পারবে না, আর যারা আজকের ঘটনাকে প্রবাহকে বুঝতে পারে না তারা ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারবে না। দুঃখজনক হলেও সত্য, ফিলিস্তিনকে কেন্দ্র করে ১০০ বছরের একটি প্ল্যান নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল নাম হল, গ্রেট ইসরাইল প্রজেক্ট। আজ আমরা যায়নবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের পাঁচদফা পরিকল্পনার মুখোমুখি দাড়িয়ে, এই দফাগুলো হলোঃ
১। ১৮৯৭ সালে প্রথম যায়নিস্ট কংগ্রেসের মাধ্যমে তারা তাদের প্রথম পদক্ষেপ গ্রহন করে। আর সেটা হল ফিলিস্তিনে ইয়াহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
২। দ্বিতীয় পদক্ষেপ ছিল, ‘ব্যালফোর ডেক্লারেশন’। এই ডেক্লারেশনের মাধ্যমে তারা ইসরাইল রাষ্ট্রের চিন্তাকে রাজনৈতিক ময়দানে নিয়ে আসে।
৩। তৃতীয় পদক্ষেপ ছিল, জাতিসংঘকে ব্যবহার ১৯৮৪ সালে তথাকথিত ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করে।
৪। চতুর্থ পদক্ষেপ ছিল, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে গ্রেট মিডল ইস্ট প্রজেক্টের নামে মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রকে নতুনভাবে অংকন করে একের পর এক তাদের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন শুরু করে।
৫। তাদের পঞ্চম পদক্ষেপ হল, ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্ল্যানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের বুকে সর্বশেষ প্যারেক মারার চেষ্টা করছে।
এরপরের সিরিয়ালে কি কি আছে?
১। প্রমিসড ল্যান্ড আছে যা নীল ও ফোরাতের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
২। দিয়ারবাকির, মারদিন, চুকুরোভা এবং তাদের সর্বশেষ টার্গেট হল আমাদের প্রিয় দেশ তুর্কী।
আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে যদি আমরা তাদেরকে ফিলিস্তিনে পরাজিত করতে না পারি তাহলে আগামীকাল তারা আমাদেরকে ইস্তানবুলে পরাজিত করবে। ইস্তানবুলকে দখল করার চেস্টা করবে। আজকে যদি আমরা ফিলিস্তিনকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে আগামীকাল আমাদেরকে তুর্কীকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ করতে হবে।
প্রিয় ভাইয়েরা,
সারা রাত-দিন কান্না কাটি করে লাভ নেই, এতে মুসলমানদের কোন ফায়দা বয়ে আনবে না। আজকে আমাদের যেসকল প্রশ্ন করা প্রয়োজন সে প্রশ্ন সমূহ হল,
- সাম্রাজ্যবাদীরা যখন একের পর এক তাদের সকল পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করে চলছে আমরা তখন কি করছি??
- সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের শতবর্ষী পরিকল্পনা সমূহকে যখন সামনে নিয়ে আসছে তখন আমরা কি করছি?
- বাগদাদ, শাম, কুদুস, কাবুলকে যখন তারা মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে আমরা তখন কি করছি?
- এই অন্যায় ও জুলুমপূর্ণ ব্যবস্থাকে পরাজিত করে ন্যায় ভিত্তিক নতুন এক দুনিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি নাকি সাম্রাজ্যবাদের দালালী করে একে অপরকে হত্যা করছি?
- আমাদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার পরিবর্তে কেন আজ আমরা মাজহাবী ভিন্নতাকে ও জাতিগত ভিন্নতাকে সামনে এনে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে রাখছি?
প্রিয় ভাইয়েরা,
কেবলমাত্র শত্রুর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কোন লাভ নেই। এটা হল দুর্বলদের কাজ। যারা নিজেদের ভূমিতে, নিজেদের অঞ্চলে নিজেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোন পরিকল্পনা করতে পারে না তারা অন্যের দালালী করতে বাধ্য। সাম্রাজ্যবাদীরা শক্তিশালী বলে আজ মুসলিম উম্মাহর অবস্থা এমন নয় বরং আমরা উম্মাহ হিসেবে আমাদের দায়িত্ত্বপালন করতে ব্যর্থ হওয়ায় আজ তারা আমাদের উপর এমন নির্যাতন চালানোর সাহস পাচ্ছে। আজ আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, সাম্রাজ্যবাদীরা যখন কুদুসকে, ফিলিস্তিনকে দখল করে নিচ্ছে তখন আমরা দর্শকের ভূমিকা পালন করছি। আজকে যখন কুদুসকে ছিনতাই করা হচ্ছে তখন আমরা আমাদের মাজহাব নিয়ে ও জাতীয়তাবাদ নিয়ে পড়ে আছি।
কুদুসের ও ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপর যখন নির্যাতন চালানো হচ্ছে তখন আমরা আমাদের ক্ষমতার মসনদকে ধরে রাখার জন্য নিশ্চুপ হয়ে বসে আছি। দিনে চল্লিশবার আল্লাহু আকবর বলে, দিন শেষে ট্রাম্পের কাছে আত্মসমর্পণ করছি।
প্রিয় ভাইয়েরা আমার,
আমি আবারও বলছি, সাম্রাজ্যবাদীদের গ্রেট মিডল ইস্ট প্রজেক্টের বিপরীতে ‘গ্রেট ইসলামিক ইউনিয়ন’ প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে আমাদের আরো অনেক-ক-ক-ক-ক-ক কাঁদতে হবে। ফিলিস্তিন আজ আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদের শিকার। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে যায়নবাদীরা। এই আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদকে কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক ইন্তিফাদার মাধ্যমেই মোকাবেলা করা সম্ভব। আমাদের ভিন্নতাকে সামনে নিয়ে এসে নয়, আমাদের ঐক্য সুসংহত করেই এই আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদকে মোকাবেলা করা সম্ভব। কথার ফুলঝুড়ি নয়, এই জন্য এখন সময় হল কাজ করার। আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে চাই তাহলে কথার ফুলঝুড়ি নয় শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। কারণ, ইসরাইল কখনো মুখের ভাষা বুঝে না, সে কেবল শক্তি ও অস্ত্রের ভাষা বুঝে। তাই সে যে ভাষা বুঝে তার সাথে সেই ভাষাতেই কথা বলতে হবে। আজ থেকে ৫১ বছর আগে ফিলিস্তিন ও মসজিদে আকসাকে রক্ষা করার জন্য OIC প্রতিষ্ঠা করা হয়। তুরস্ক এখন OIC প্রেসিডেন্ট। আজকের এই ময়দানে সমগ্র জাতি ফিলিস্তিন নিয়ে তার অভিব্যক্তিকে ব্যক্ত করেছে এখন দায়িত্ত্ব হল রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছে তাদের। ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রেস ব্রিফিং ইসরাইলকে আরো সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে।মুসলিম বিশ্বের নেতাদের দায়িত্ত্ব হল, উম্মাহর আহবানে সাড়া দেওয়া। উম্মাহর আহবানকে বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহন করা।
প্রিয় ভাইয়েরা,
কি কি করতে হবে এটা সবাই জানে। তবুও আমি কিছু বিষয় উল্লেখ করতে চাই, স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে–
- ডি-৮ সহ, সকল আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংগঠন সমুহকে এক্টিভ করা।
- সকল মুসলিম দেশের উচিত হল, অনতিবিলম্বে ইসরাইলের সাথে সকল ধরণের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ছিন্ন করা
- ইসরাইলের পণ্য বর্জন সহ ইসরাইলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবরোধ আরোপ করা।
- যে সকল প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আইন ও আন্তর্জাতিক মূল্যবোধকে শ্রদ্ধা করে তাদেরকে সাথে নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং এই ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা।
- দক্ষিন অ্যামেরিকা থেকে এশিয়া পর্যন্ত ‘প্লাটফর্ম ফর প্যালেস্টাইন’ প্রতিষ্ঠা করা।
- সকল মুসলিম দেশের আকাশপথ, জলপথ ও স্থলপথকে বন্ধ করা দেওয়া।
- OIC র অধীনে ফিলিস্তিন শান্তি বাহিনী গঠন করতে হবে। এই বাহিনীকে সর্বাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করে, ফিলিস্তিনের মানুষের জান ও মালকে রক্ষা করার জন্য গাজায় পাঠাতে হবে এবং এই বাহিনীর ঘাটি হবে গাজা।
আমি জানি এই সকল প্রস্তাবনা আমরা নিজেরা বলে নিজেরাই শুনছি। তবে আমি বিশ্বাস করি এমন একদিন আসবে যেদিন এর সকল ধারাই বাস্তবায়িত হবে ইনশাল্লাহ। কারণ এই বিশ্বাসকে ধারণকারীরা যখন ক্ষমতায় আসবে তখন এই সকল ধারাই হবে তাদের প্রথম কাজ।
দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেঃ
- আমাদের প্রধান কাজ হল, মুসলিম দেশ সমূহ একে অপরের পেছনে না লাগা। আমাদের যে শক্তি ও সম্পদ আছে এই শক্তি ও সম্পদকে আমাদের একে অপরকে ধ্বংস করার জন্য নয় একে অপরকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করতে হবে।
- আমাদেরকে সাম্রাজ্যবাদীদের নীলনকশাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
- প্রতিরক্ষা শিল্প ও প্রযুক্তিতে গুরুত্ত্ব দিতে হবে এবং এই ক্ষেত্রে একে অপরকে সাহায্য করতে হবে।
- সকল মুসলিম দেশের উচিত হবে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে নিজেদেরকে শক্তিশালী করা।
- আমাদের সম্পদ সমূহকে সঠিক ভাবে ও সঠিক স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
- আমাদের মধ্যকার ব্যবসায়িক সম্পর্ককে বৃদ্ধি করতে হবে এবং এই ব্যবসা আমাদের নিজস্ব মুদ্রায় করতে হবে।
- বিশ্ব মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় ‘ মুসলিম সেনাবাহিনী’ গঠনের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
হে মিল্লি গরুশের ভাইয়েরা,
জেনে রাখুন! অবস্থা যতই কঠিন হোক না কেন, আমাদের বিশ্বাসে হতাশা ও বিষণ্ণতার কোন স্থান নেই। রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটবর্তী হয় এই কথা আমাদের মানসপটে সর্বদায় লালন করতে হবে। আজকে আপনারা এই ময়দানে সমবেত হয়ে নিজেদের যে দায়িত্ত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন আমি মনে করি এটা হল সুবহে সাদিকের পূর্বাভাস।আজকের ময়দানে আপনারা আপনাদের উচ্চকিত কণ্ঠে জুলুমের প্রতিবাদ করছেন। আজ আপনারা মুখের ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন। মনে রাখবেন, সেই দিন অনেক নিকটবর্তী যেই দিন আমরা এই জুলুম নির্যাতনকে হাত দ্বারা প্রতিহত করব ইনশাল্লাহ।
হে ইসলামি আন্দোলনের কর্মীরা মনে রাখবেন, জুলুম নির্যাতন চিরস্থায়ী হয় না হবে না।জালিমরা অবশ্যই অবশ্যই পরাজিত হবেই হবে। আজকের মুসলমানদের এই বিভাজন দেখে কেউ যেন একথা মনে না করে যে ইসলামী ঐক্য প্রতিষ্ঠা হবে না। ইনশাল্লাহ, একদিন অবশ্যই অবশ্যই ইসলামি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা হবেই হবে।
সেই স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতিষ্ঠা অনেক নিকটবর্তী যে ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে ‘আল-কুদস’।
ভুলে যাবেন না, ‘ বিজয় মুসলমানদের আর বিজয় নিকটবর্তী’
অনুবাদ: বুরহান উদ্দিন আজাদ