হাল যামানায় আমাদের সংস্কৃতি ও উৎসব; প্রেক্ষিতে ইসলামী সভ্যতা

জ্ঞানসম্রাট ‘আলিয়া ইজ্জেতবেগভিচ‘ বলেছিলেন-
“সংস্কৃতি ধর্মের চেয়েও বেশী প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম, সংস্কৃতির ক্ষমতা একটি সভ্যতার চেয়েও বেশী ক্ষমতাবান।”

এরইসাথে আরোও একটি বিষয় হচ্ছে, ধর্ম ও সংস্কৃতি একে অপরের দ্বারা সমৃদ্ধ হয়, একে অপরের প্রভাবে উন্নত হয়।
কিন্তু তিক্ত বাস্তবতা হচ্ছে,

পাশ্চাত্য সভ্যতা এবং তাদের চিন্তার উপমহাদেশীয় ফসল ব্রাহ্মণ্যবাদীরা যখন নিজেদের ধর্মকে ব্যাখ্যা করে তখন ধর্ম এবং সংস্কৃতিকে পাশাপাশি রেখেই তাদের চিন্তাকে তুলে ধরে, কিন্তু তারা যখন ইসলাম ব্যাখ্যা করে তখন মুসলিমদের সামনে সংস্কৃতিকে ধর্ম থেকে আলাদা ভাবে অর্থাৎ শুধুমাত্র ধর্মতাত্ত্বিক একটি বয়ান হাজির করে। 

যেমন “উৎসব” এমন একটি ব্যাপার যা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সকলের জন্যই আবশ্যকীয় একটি বিষয়। কেননা হিউম্যান সাইকোলজি কে ব্যাখ্যা করলে, মানুষের/মানবজাতির ইতিহাসকে ভালোভাবে পড়লে একটি বিষয় খুব ভালোভাবে স্পষ্ট হয় তা হচ্ছে- যুব সমাজের আত্মিক পরিশুদ্ধি, নৈতিক পরিশুদ্ধি, চেতনা ও ভিশনারি জীবন কখনোই শুধুমাত্র বই, লেকচার দিয়ে গড়ে তোলা যায়না, এসকল কর্মসূচির সাথে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরী করতে হয়, এর মাধ্যমেই মূলত যুব সমাজ উজ্জীবিত হয়ে থাকে এবং যুগে যুগে এভাবেই উজ্জীবিত হতো। এই সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে উৎসব

একটি সভ্যতার সংস্কৃতিক ভিত্তি নির্মাণ করতে, ইতিহাসের বয়ান তৈরিতে, ইসলামের মতাদর্শকে ছড়াতে, প্রশ্নহীন করতে, সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা পেতে এবং স্বর্ণালী ইতিহাস, স্মৃতিসমূহ কে জীবন্ত রাখতে ধর্ম ও সাংস্কৃতির সম্মিলিত কর্মসূচি বয়ান তৈরি করতেও উৎসবের বিকল্প নেই।
আবার, ধর্মীয় উৎসব গুলির সবচেয়ে শক্তিশালী ফলাফল হচ্ছে আধ্যাত্মিক বলয় সৃষ্টি করা।সাথেসাথে, উল্টো দিকে প্রতিটি ধর্ম, ভাষা, অঞ্চলভিত্তিক যে সংস্কৃতিক কর্মসূচি, উৎসব রয়েছে তার পেছনেও থাকে নির্দিষ্ট মতাদর্শগত উদ্দেশ্য ও সাংস্কৃতিক ভিত্তি। তাই প্রতিটি উৎসবের পেছনেই লুকিয়ে থাকে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য, রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা!

এজন্য আগে বুঝতে হবে পাশ্চাত্যে ও ব্রাহ্মণ্যবাদীদের এক্ষেত্রে এত সফলতা ও প্রচারণা কেন! মুসলিমরাও বা কেন এর থেকে এত দূরে অবস্থান করছে! সবকিছু কেই কেন ধর্মতাত্ত্বিক বয়ানের মাঝেই সীমাবদ্ধ করছে। 

এক্ষেত্রে মূল বিষয় হচ্ছে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি একটি আরেকটির পরিপূরক। তাই এই তিনটি বিষয়কে একসাথে মিলিয়ে পাঠ করতে না পারলে, কর্মসূচি না দিতে পারলে শুধুমাত্র ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকেই ইসলামকে দেখতে হবে! আর যেটি হবে একটি কাঠখোট্টা মার্কা অসহায় ইসলাম!
আর পাশ্চাত্যের মূল সফলতা এখানেই…

যাইহোক আমরা যদি পাশ্চাত্যের কৌশল বুঝে, তারপর ইসলামী সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাই যে, আরবের হিজাজ অঞ্চল, ধর্মীয় ধরার দিক থেকে শক্তিশালী এবং সমগ্র আরবের কেন্দ্র ছিল। তবে আরব অঞ্চল সভ্যতা ও সাংস্কৃতিকভাবে দুনিয়ার অন্যান্য সভ্যতার তুলনায় তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে ছিল।
ইসলামের বিজয় পতাকা যখন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছিল ইসলামী সভ্যতা তখন গ্রীক সভ্যতা, রোমান সভ্যতা সহ আরও বড় বড় সভ্যতা ও তাদের প্রতিষ্ঠিত সংস্কৃতির মুখোমুখী হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো ইসলাম এই চেলেঞ্জকে কিভাবে গ্রহণ, মোকাবিলা করেছে এবং ইসলামীকরণ করার মাধ্যমে সমাধান করেছে?

এক্ষেত্রে ইসলামের সবথেকে বড় সফলতা হচ্ছে ইসলাম তার প্রাথমিক সময়েই সংস্কৃতির শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ ও স্থায়ী মূলনীতি প্রণয়ন করে।
এই শক্তিশালী ভিত্তি, মূলনীতির আলোকে ইসলাম প্রতিটি অঞ্চলে তার উপরই ভিত্তি করে এক বিশ্বজনীন সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি করে। দুনিয়ার কোন অঞ্চলের কোন সংস্কৃতিকেই ইসলাম অবহেলা করেনি বরং অঞ্চলের অনৈতিক, কুসংস্কারচ্ছন্ন বিষয়গুলিকে দূর করে সে অঞ্চলের নৈতিক ও সুস্থ সংস্কৃতির সাথে ইসলামের মূলনীতির সাথে মিলিয়ে নতুনভাবে স্থায়ী সাংস্কৃতিক ভিত্তি রচনা করে, ধারা সৃষ্টি করে।
(এক্ষেত্রে একটি বিষয় হচ্ছে ইসলামী সংস্কৃতি আর আরব সংস্কৃতি এক বিষয় নয় । ইসলামী সংস্কৃতির বিশ্বজনীন ও স্থায়ী মূলনীতি রয়েছে, তবে মডেল হয় আঞ্চলিকতার ভিত্তিতেই।)

ইসলাম প্রতিটি বিজিত হওয়া অঞ্চলে সামগ্রিক ঐক্য ও সামাজিক বলয় সৃষ্টি করতে সেই সমাজের মাটি ও মানুষের সাথে মিল রেখে অসাধারণ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি গ্রহণ করে এবং ব্যাপকহারে সাংস্কৃতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। আবার প্রতিটি উৎসব, বয়ান-ই যুবসমাজকে উম্মাহ কেন্দ্রিক চেতনায় উদ্ভাসিত করে রাখে।
আধ্যাত্মিক ছোঁয়া, সাংস্কৃতিক বলয়, মৌলিক চাহিদা(সামাজিক কমিউনিটি, ক্লান্তির পর প্রশান্তির ছোঁয়া, বিনোদন, মানসিক চার্জ, অবসরে প্রশান্তি পূর্ণ সময় যাপন) এসব বিষয়কে সামনে রেখে ইসলাম নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতো। যেমন কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যায়,

• ইসলামী সভ্যতায় মসজিদের স্থাপত্য থাকতো অত্যন্ত কারুকার্যপূর্ণ, অসাধারণ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত। আর সাথেই থাকতো আড্ডা দেওয়ার জায়গা ও লাইব্রেরি, নামাজের জোরপূর্বক না নেওয়া হলেও সমস্ত যুবসমাজের আড্ডা, লাইব্রেরি ছিলো মসজিদ কেন্দ্রিক, যা এক রোহানি সংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি করত। যাকে কেন্দ্র করে যুবক, শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ একটা সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকত।
• ইসলামী সভ্যতা দুটি ঈদ, রমজান সহ গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিকে কেন্দ্র করে যুব বান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করত, উৎসবের আয়োজন করত। যা গোটা সমাজের সকলকেই একত্রিত করে একটি রুহানি প্লাটফর্ম দিতো এবং এর সাথে থাকতো ইসলামের প্রাণসত্তা, সুদূরপ্রসারি চিন্তা, উম্মাহ কেন্দ্রিক চেতনা। সে ক্ষেত্রে কিছু দিবসের কথা উল্লেখ না করলেই নয়,

 ১) ঈদ ও রমজান কে কেন্দ্র করে যে পরিবেশ সৃষ্টি হতো, রাষ্ট্রীয় উদ্দীপনা শুরু হতো তাতে যুবকেরা- স্বজন হারানো গরিবদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর শিক্ষা পেতো, নিজে গোপনে উপকার করা ও অনান্য যুবক, শিশুদের উৎসাহ প্রদান করা, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বঞ্চিত সব বন্ধুদের জন্য দোয়া করা, মুজাহিদদের জন্য দোয়া করা, সকালে বের হয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী সদকা করা, তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করে ঈদগাহে যাওয়া। পাঞ্জাবী, জুব্বা, লুঙ্গি পড়ে সবাই মিলে ঈদগাহে যাওয়া। নকশি টুপি পড়া, গায়ে আতর মাখা, পিচ্চিদের সালামী দেওয়া, বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্না করে সবাইকে নিয়ে খাওয়া আর এই অংশগ্রহণের মাঝে অন্যান্য ধর্মের সকলকে নিয়েই একাকার হয়ে যেত মুসলিম সম্প্রদায়।

২) সকল উৎসবকে কেন্দ্র করে নানা ক্যালিগ্রাফি, আর্টশিল্প দিয়ে ভরে যেত প্রতিটি রাস্তা, বাড়ির দেয়াল। বাচ্চাদেরকে নিয়ে এসব সাজানো হতো, নানাবিধ গান, তাকবীর, জিকিরে ভরে উঠত চারপাশ।

৩)  বদর দিবসে শেখানো হতো, জুলুম উৎখাতের শিক্ষা। বাণী ছড়ানো হতো, আদালত প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও দ্বীনের জন্য না খেয়ে থেকে রক্ত ও জীবন দান করার। সকল যুবকদের চিন্তারাজ্যে উপলব্ধি হতো, প্রতিটি যুদ্ধ-সংগ্রাম হচ্ছে হক্ব প্রতিষ্ঠার, জুলুমের প্রতিবাদী আন্দোলনের নাম। বদর হচ্ছে বিশ্ববাসীকে মুক্তির সংস্কৃতি, সামাজিক আন্দোলনের নাম। নাশিদ, সাফিনা দিয়েও ভরে উঠত এই দিনটি।

৪)  মক্কা বিজয় দিবস একইভাবে কর্মসূচিতে আবৃত হত গোটা বিশ্বব্যাপী। মাস ব্যাপী পালিত হতো সিরাতুন্নবী, মিলাদুন্নবী।

৫)  কারবালা দিবস ছিলো, প্রতিবাদের সংস্কৃতি, আহলে বায়াতের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের দিবস। সাহাবাদের মত আশুরা ছিলো নতুন বছরের পরিকল্পনা করা ও রোজা রাখার দিবস।

৬)  শবে মেরাজ’কে কেন্দ্র করে গোটা দুনিয়ার মুক্তির জন্য বাইতুল মুকাদ্দাস বা কুদুসের চেতনা, কুদুসের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কতবেশী তা গোটা জাতির সামনে তুলে ধরা হতো। শবেবরাত’কেও একইভাবে রুহানিয়্যাতের বলয় সৃষ্টিকারী দিবস হিসেবে সামনে আনা হতো।

এসবের মধ্য দিয়ে ইসলামের স্বর্ণালী অতীতকে স্মরণ করা..
পূর্ববর্তী মহান বীর আমর ইবনুল আস, মুহাম্মদ বিন কাসিম, সুলতান ফাতিহদের পরবর্তী প্রজন্মের সামনে মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতো। স্মরণ করা হতো প্রজ্ঞাবান আলেমদেরকে, তাদের জ্ঞানের বিশাল সফরে কীভাবে তারা পথপাড়ি দিয়েছে তা শুনানো হতো ছাত্রসমাজ কে।
ইসলামী সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্বের উপর পাড়ায় পাড়ায় দারসের আয়োজন হতো, শিশুদের শোনানো হত অলি-আউলিয়া মুজাহিদের গল্প।

• সকল সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, উৎসব হত সার্বজনীন। এমনভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালন হতো, সামাজিক পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হতো যার ফলশ্রুতিতে সকল ধর্ম, গোত্র সকলে অংশগ্রহণ করতে পারতো। বিশেষ করে সকল শ্রেণীর যুবসমাজ একে কেন্দ্র করে মেতে উঠতো… 
আনন্দঘন পরিবেশ ফুটে উঠতো গোটা সমাজের। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সর্বশ্রেষ্ঠ নজির এই ‘ইসলামী সভ্যতা’র সাংস্কৃতিক কর্মসূচি।

• একইভাবে বাংলা সালতানাত, সুবে বাংলা আমলেও গোটা অঞ্চল এভাবেই উজ্জীবিত হত। সীরাতুন্নবী উপলক্ষে মাসজুড়েই শোকরানা মাহফিল, জিকির ও কাসিদা পাঠ হতো, খতমে সীরাত অনুষ্ঠিত হতো। বিভিন্ন দিবসে মসজিদগুলোতে নানাবিধ আয়োজন থাকতো, শিশু ও মহিলাদের জন্য থাকতো আলাদা জলসা, মিষ্টি খাওয়া এবং খাওয়ানো, বিকেলে মাঠে ‘নাতে রাসূল সন্ধ্যা’।

চারদিক হতেই ভেসে আসতো সুবাসিত খুশবু ও আতরের ঘ্রাণ। যেমন, রমজানে বাংলার ঐতিহ্য-ই ছিল মহল্লায় মহল্লায় দফ বাজানো, উচ্চস্বরে জিকির, নাশিদ গাওয়া, সেহেরীর সময় যুবকরা ঘুরে ঘুরে জাগানোর সংস্কৃতি চালু ছিল ব্যাপকভাবে, আর মোমবাতি, বিভিন্ন লাইটিং ইত্যাদির সমন্বয়ে অসাধারণ সংস্কৃতির ছোঁয়া বয়ে যেতো গোটা মানবসমাজের মাঝেই।

• এমনকি ব্রিটিশ শোষণকালীন কঠিন পরিস্থিতিতেও সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির জন্য মুসলিমরা উঠোনে বসে নারিকেলবাড়িয়ার জঙ্গগাথা শোনা, তিতুমীরের শাহাদাতের বিদ্রোহী কথামালা বলা এবং পুথি, গানের মাধ্যমে মুক্তির কথাগুলো তুলে ধরা হতো। কন্ঠ জুড়ে থাকতো সাম্রাজ্যবাদীদের ভয়ঙ্কর জুলুমীর শাসন, আমাদের সংগ্রাম, শাহাদাত। তিতুমীর, শরীয়তুল্লাহর ত্যাগ, ফকির মজনু শাহ বিদ্রোহের গল্প দিয়েই তৈরি হতো নতুন বিদ্রোহের বয়ান।
অনান্য সকল উৎসবের ন্যায় ফাতেহা ইয়াজদাহম, দোয়াজদহম, মিলাদুন্নবী, শবে মেরাজ, নারিকেলবাড়িয়া দিবস, বঙ্গ বিজয় দিবস ইত্যাদি ব্যাপকভাবে পালন ও পালনে উৎসাহিত করা হতো সকল সম্প্রদায়কে।

এখন প্রশ্ন হলো বর্তমান সময়ে এসে এই অবস্থা কেন হল? কেন আলেম সমাজ, ইনস্টিটিউট সমূহ এ ব্যাপারে চুপ থাকেন অথবা ধর্মতাত্ত্বিক সমাধান খুঁজেন? কেন চারকোটি যুবক-যুবতী, তিনকোটি শিশুর তথা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কোন চিন্তা পরিকল্পনা কি নেই আমাদের? সবাই কি মাদ্রাসায় পড়ুয়া বা বাস্তবতা বর্জিত কথিত পীরসাহেব হবে! এটা কি আদৌও সম্ভব?

♦ সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে BYLC, JAGO এর মতো হাজারো সংগঠন যুবকদের রাজনৈতিকভাবে নির্জীব করে দিচ্ছে! চাকচিক্যতা দিয়ে মাকালফল মার্কা লীডারশীপ তৈরির সামাজিক সংগঠনের চিন্তায় ভরে যাচ্ছে! রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক চিন্তার জায়গায় ধ্বজভঙ্গ করে দিচ্ছে! (সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবতায়কারী এজাতীয় সংগঠন গুলিকে তাদেরই মিডিয়া যেভাবে তুলে ধরছে, তাতে গোটা সমাজ তাদেরই আইডল ভাবছে!)
আমরা কোনো কর্মসূচি না দিতে পারলে তারা ওদিকেই দৌড়াবে, এটাই তো স্বাভাবিক।

♦ আমাদের সংস্কৃতি, রমজান, ঈদের মতো দিবসগুলোতেও যুবকরা মুসলিম সালতানাতের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারছেনা, সে সময় তারা পাশ্চাত্যের চোখ দিয়ে সমাধান খুঁজছে!

ঈদের দিনসহ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দিবস গুলোতেও পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী/ভোগবাদী কালচারের প্রভাবে যুবক শ্রেণী মুভি দেখে, ঘরের কোণে বসে থাকে, ফেসবুক চালায়! হাসিগুলোও থাকে সেল্ফির জন্য! কনসার্ট, ঘোরাফেরাগুলোও যেনো হয় ছবি তোলার জন্য!
আনন্দের পন্থাই যুবকরা কেউ জানিনা! জানিনা আমাদের উৎসব কতটা সামাজিক, কতোটা যুববান্ধব। আর তাই কষ্টকর বিষয় হচ্ছে, যুবসমাজ ঈদের দিনের আনন্দটাও পাশ্চাত্যের মতো করে করছে এবং সেটাকেই কি সফলতা ভাবছে!

কিন্তু কেন?

♦শিক্ষাব্যবস্থায় সিলেবাসকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে ইসলামী সভ্যতার ন্যূনতম ধারণাটুকুও পাচ্ছেনা! বরং উল্টো বয়ান দ্বারা আবৃত হচ্ছে! আজ যুবক শিশুরা জানেনা ফররুখ আহমেদ কে! কাদের নেওয়াজ কে! তাদের কবিতাগুলো পর্যন্ত উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে!
মুসলিম চেতনাদীপ্ত পরিচয় কে নাই করে দেওয়া হচ্ছে! হিন্দুত্ববাদী, সেকুলার, আওয়ামীকরণ যেভাবে পাবলিক মেমোরিতে ধাক্কা দিচ্ছে আজ মনে হচ্ছে একাত্তর এর পূর্বে কোন ইতিহাস-ই নাই! (এ বয়ানটির অধিকাংশ বিষয় সাংস্কৃতিক ভাবেই সামনে এনেছে, তুলে ধরেছে এবং আজ ইহা একটি প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস। উপন্যাস, সিনেমা, নাটক, বছরে বহু দিবস উদযাপন, কনসার্ট, স্থাপত্য ইত্যাদির মাধ্যমে।)

♦ ইন্ডিয়ার প্রোপাগান্ডার বাহিরে, মিডিয়ার পরিকল্পিত প্রচারণার বাহিরে আজ কেউ কিছুই চিন্তা করতে পারে না! যান্ত্রিক নগরবাস, প্রাণহীন গ্রাম সবমিলিয়ে যুবক শিশুমন জানেনা তাদের সত্যিকারের পরিচয় কী! তাদের সংস্কৃতি কী!

আর এভাবে চলতে থাকলে আত্মপরিচয় সংকট সাংস্কৃতিক সংকট আরো বাড়তেই থাকবে এবং বাড়তেই থাকবে। 

চিন্তা করুন তো গোটা মুসলিম যুব সম্প্রদায়ের এই অবস্থা এর পিছনে কোন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রপাগান্ডা বা উদ্দেশ্য কি নেই?
কতটা ভয়াবহ ভাবে শেষ করা হচ্ছে ‘আগামী প্রজন্মের প্রাণসত্তাকে’ সেটা কি আমরা ভাবতে পারছি?

তাই, উপরের উৎসবের নাম্বার এর আলোকে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাইছি,

• ১নং উৎসবের আলোকে যদি ঈদ ও রমজানের রুহানিয়্যাতের হাওয়া যদি সেই মুসলিম সভ্যতার আলোকে যদি এখনো বয়ে যেতো, সেভাবেই চতুর্মুখী সামাজিক সুঘ্রাণ ছড়াতো, সেভাবেই সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টি হতো। তাহলে শিশু, যুব ও নারীসম্প্রদায় কি আদৌও পাশ্চাত্যের ন্যায় ফেসবুকীয় সেল্ফিত্বের আনন্দ খুঁজে বেড়াতো?

• ২নং উৎসবের ন্যায় শহরজুড়ে যদি এভাবেই গুছালো, পরিছন্ন ও আধ্যাত্মিক ডেকোরেশন হতো তাহলে হিন্দুত্ববাদী বৈশাখী প্যাঁচা ও বস্তুবাদী ধারায় নিজেদের বিলিয়ে দিতাম? আকল, দৃষ্টি, মনন কি আমাদের ভোগবাদীতার দিকে ধাবিত করতো?

• ৩নং উৎসবের আলোকে মুক্তির জন্য দিবসটিকে ব্যাপকভাবে সামনে আনা হতো, চিন্তাকে তুলে ধরা হতো, তাহলে আমাদের সংগ্রামী চেতনার বলয় কতটা অগ্রসর হতো চিন্তা করতে পারেন?

• ৪নং উৎসবের আলোকে মক্কার সত্যিকার চেতনাদীপ্ত শ্লোগান, উৎসবমুখর পরিবেশ, বিজয়দীপ্ত কবিতা ও গানের কনসার্ট যদি সারাদেশে ব্যাপকভাবে পালন হতো, তাহলে কি থার্টি ফাস্ট নাইটে গোটা সমাজ বিলীন হতো? বিজয়ের এই কর্মসূচি গুলো যুবকদের আত্নবিশ্বাসকে কতটা পাহাড়সম করতো তা কখনো ভেবে দেখেছি কি?

৬নং উৎসবের আলোকে যদি কুদুস ব্যাতীত মুসলিম জনপদগুলো মুক্তি অসম্ভব ও মানবতার মুক্তির চিন্তা, কুদুসকে কেন্দ্র করে মেরাজের রাতে যেভাবে সকল নবীরা একত্রিত হয়েছিলেন আমরাও এই কুদুসকে কেন্দ্র করে গোটা উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হবো। এসকল চিন্তা নিয়ে, গুরুত্ব নিয়ে সেমিনার, কনফারেন্স করলে, রাতে দারসের আয়োজন করলে যুবসমাজের চিন্তার পর্যায় কোথায় পৌছাতো, তা একটু অনুভব করলেই বুঝা যায়।

সিরাতুন্নবী, মিলাদুন্নবী এসকল কর্মসূচির গুরুত্ব, যুবমননে এর ইফেক্ট সম্পর্কে আমরা সবাই কি অবগত নই?

(এসব বিষয় নিয়ে অনেক গ্রুপ ভণ্ডামি করে! তাই কথিত সালাফিরা সেই ভণ্ডামি হাইলাইট করে সব হারাম বানিয়ে দেয়! প্রশ্ন হলো ভন্ডরা তো আক্বিদা নিয়ে, সুন্নাত নিয়েও বাড়াবাড়ি, ভন্ডামি করে! তখন কি আক্বিদা, সুন্নতকে আপনারা ছেড়ে দেন?
শুধু ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখে যদি সংস্কৃতিক বিশাল অংগনকে, উৎসবকে হারাম বানিয়ে তা বাদ দিয়ে দেন! সেটা কি বাড়াবাড়ি নয়?)

আবারো তাই প্রশ্ন করছি উপরোক্ত বিষয়গুলি থাকলে কি মানুষ, যুবকরা তাদের চাহিদায় পাশ্চাত্য সংস্কৃতি খুঁজতো?
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যক্তিরা থার্টি ফার্স্টনাইট, ভ্যালেন্টাইন্স ডে, বার্থডে, অনৈতিক কনসার্টের মধ্য দিয়ে যুব সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতো বা এসবকেই নিয়ন্ত্রণের পন্থা মনে করতো?
অথবা আমাদের আলেমদের ফাতোয়া দিয়ে এই সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরোধীতা কর‍তে হতো?

কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব সাংস্কৃতিক ভিত্তি তৈরি করতে না পারলে, ভিত্তি সম্পর্কে না জানলে, বিকল্প না দিতে পারলে, সত্যিকারের ইতিহাস না জানানো হলে কখনোই সমাধান সম্ভব না।
ব্রিটিশরা কিন্তু আমাদের অঞ্চলে এই কাজটাই করেছিল।

যেমন- জহির উদ্দিন বাবর, ইলতুৎমিশ ২০% মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে গোটা উপমহাদেশ চালিয়েছেন, তার অন্যতম ভিত্তি ছিল এই সাংস্কৃতিক বলয়, এই উৎসব গুলো। ব্রিটিশরা এসে যখন দেখল কোনভাবেই জনগণ থেকে ইসলামের প্রাণসত্তাকে সরানো যাচ্ছেনা, বলয়কে নষ্ট করা যাচ্ছেনা, তখন তারা বুঝতে পারলো শুধু জ্ঞান, ক্ষমতা, অর্থনীতি, নষ্ট করলেই হবেনা বরং বিকল্প সাংস্কৃতিক ধারা তৈরি করতে হবে। তাই তারা বঙ্কিম, বিবেকানন্দ, ঈশ্বরচন্দ্রদের দিয়ে মিরাজ, মিলাদুন্নবী ইত্যাদির বিপরীতে স্বরস্বতী, হলি, দেওয়ালী উৎসবকে ব্যাপকভাবে হাইলাইট করতে শুরু করলো, মক্কা বিজয় দিবসের দিন থার্টি ফার্স্টনাইট জাতীয় ভোগবাদী উৎসব নিয়ে আসে..

আজও সেই ধারা শক্তিশালী ভাবে বিদ্যমান রয়েছে আমাদের সমাজে! আর এতে কি বৃটিশদের ফতোয়ায় প্রয়োজন হয়েছে?

এজন্য দৃঢ়ভাবে বারবার বলা যায়, এ ধরনের ধারা তৈরি তথা ইসলামী সংস্কৃতিক ভিত্তির উপর ভিত্তি করে বিকল্প না দিতে পারলে, শুধুমাত্র ফতোয়া দিয়ে কখনোই পাশ্চাত্যকে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য ফতোয়া বা বিদাআতী বিধান পড়ার আগে আমাদের ইতিহাস, হিউম্যান সাইকোলজি, সংস্কৃতি নিয়ে পড়াশোনা করা বেশি জরুরি।

সবচেয়ে বড় কথা হল সবকিছু হারাম/বিদায়াত বানিয়ে, ফতোয়া দিয়েই কি দায়িত্ব শেষ? হালাল উৎসব পালনের উদ্ভাবনী শক্তি কি আমাদের আছে, কিংবা তার জন্য কখনো প্রচেষ্টা চালাই?

মুসলিম সংস্কৃতি কি বুঝবোনা! নিজস্ব ভিত্তি বিনির্মানের চিন্তাও করবোনা! পাশ্চাত্য হিন্দুত্ববাদের মোকাবেলায় বিকল্প তৈরি করবোনা!
তখন যুবকদের কি করণীয় থাকবে আকল দিয়ে একটু ভেবে দেখি তো।
নিজস্ব ভিত্তি উপস্থাপন এবং আমাদের নিজস্ব ক্ষেত্র তৈরি, আমাদের করণীয় এসব না দিলে শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া দিয়ে কখনোই সংস্কৃতি চলেনা।

এসবের মধ্যে দিয়ে তাই স্পষ্টতর হয়, এই ধারা সৃষ্টি ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মধ্যেই একটা জাতির ঐতিহ্যগত বয়ান তৈরি হয়, এসবের মধ্যেই জাতির ভবিষ্যৎ পথযাত্রা, নীতি-নৈতিকতা, সংস্কৃতি চেতনা, সবই ফুটে ওঠে।

(লিখিত ইতিহাস যেমন শক্তিশালী, তেমনিভাবে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শক্তিশালী। লিখিত, চর্চিত, চিত্রিত, মুদ্রিত, কথিত, ঘটিত সকল কিছুই ফুটে উঠে এই উৎসব-আয়োজনে। দেখা, কাহিনী শুনা, পড়া সবকিছুই থাকে এই উৎসব গু্লোতে, যা সবার হৃদয়ে সামগ্রিকভাবে গেঁথে যায়।)

তাই সামগ্রিক অবস্থান থেকে আমাদের সবথেকে জরুরি বিষয় হচ্ছে,

• ইসলামী সংস্কৃতির উসূল তথা নিজস্ব ভিত্তি সমুহ নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা। ভাষা শিক্ষা করা, তারপর ইসলামের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের বড়বড় শিক্ষকদের নিকটে পড়া..
এরপরে ইসলামী সংস্কৃতির মুলনীতির উপর পাণ্ডিত্য অর্জনকারীরা বর্তমান দুনিয়া, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ভিত্তিকে ভালভাবে বুঝে পর্যাপ্ত গ্রন্থ, ছাত্র তৈরি করা। সেমিনার, কনফারেন্স, প্রেজেন্টেশন দেওয়া। এসব মুলনীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিটি সময়ের আলোকেই ভিত্তি রচিত হবে।
ধারাবাহিতা রক্ষার জন্য ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা, ইসলামী সংগঠনের মাধ্যমে এই কর্মসূচিগুলোকে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা, সকল পর্যায় হতে প্রচারণা চালানো।
আর এসব চিন্তা ও কাজের মধ্যে দিয়েই ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড (উৎসব, মুভি, মিউজিক ইত্যাদি) ও নিজস্ব ধারা তৈরি হতে থাকে; ইহাই প্রাকৃতিক নীতি।
নিজেরা শক্তিশালী হওয়া। যেকোন সভ্যতা-ই প্রভাবশালী শক্তি ও বিজয়ী শক্তিতে পরিণত হওয়ার আগে অভ্যন্তরীণভাবে শক্তিশালী হওয়ার দিকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তার সবথেকে বড় উদাহরণ হচ্ছে, ইসলামী সভ্যতা। একইভাবে পাশ্চাত্য সভ্যতাও যখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলো, তারাও ইন্ড অফ দ্যা হিস্ট্রির(ইতিহাসের সমাপ্তি, আমরাই স্থায়ীভাবে দুনিয়ার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলাম) মতো শতশত গ্রন্থ প্রণয়ন করেছে! নিজেরা উজ্জিবিত হয়েছে।
এসব নিজস্ব উপকরণের মধ্য দিয়েই নিজেদের আত্মবিশ্বাস, কর্মতৎপরতা, নিবেদিত হয়ে সভ্যতা বিনির্মাণের কাজ করার বিশাল প্রজন্ম গড়ে ওঠে।
এভাবে নিজেদের শক্তিশালী দেয়াল গড়ে উঠে, এবং স্বাভাবিকভাবেই জাহিলিয়্যাতের মোকাবেলা হয়ে যায়।

এসকল মূলনীতির আলোকেই আবার সেই স্বর্নালী সভ্যতার সূর্যোদয় হবে, ইনশাআল্লাহ।

১১৯২ বার পঠিত

শেয়ার করুন

Picture of হাসান আল ফিরদাউস

হাসান আল ফিরদাউস

সংগঠক এবং সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষক হাসান আল ফিরদাউস-এর জন্ম টাংগাইল জেলায়। পড়াশুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ইসলামী সভ্যতা নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি উসূল, ফিকহ এবং রাজনৈতিক দর্শনের উপর বড় শিক্ষকদের সাহচর্যে গবেষণা করে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক স্কলার ও চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে নানাবিধ গবেষণা ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করছেন। বর্তমানে তিনি ‘ইসলামী চিন্তা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। একইসাথে জ্ঞানের পুনর্জাগরণ ও নবধারার কাগজ ত্রৈমাসিক মিহওয়ার-এর সম্পাদকও।
Picture of হাসান আল ফিরদাউস

হাসান আল ফিরদাউস

সংগঠক এবং সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষক হাসান আল ফিরদাউস-এর জন্ম টাংগাইল জেলায়। পড়াশুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ইসলামী সভ্যতা নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি উসূল, ফিকহ এবং রাজনৈতিক দর্শনের উপর বড় শিক্ষকদের সাহচর্যে গবেষণা করে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক স্কলার ও চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে নানাবিধ গবেষণা ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করছেন। বর্তমানে তিনি ‘ইসলামী চিন্তা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। একইসাথে জ্ঞানের পুনর্জাগরণ ও নবধারার কাগজ ত্রৈমাসিক মিহওয়ার-এর সম্পাদকও।

মতামত প্রকাশ করুন

Scroll to Top